Dhaka 1:01 pm, Saturday, 29 March 2025

বাবার পছন্দে কিনব

বর্ণহীন ও নিস্তেজ ঈদ কাটিয়ে।

গোটা এক দশক ফুরিয়ে গেল বর্ণহীন ও নিস্তেজ ঈদ কাটিয়ে। পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার গড়ার যুদ্ধে শৈশবের সোনালি দিনগুলোকে বিসর্জন দিয়ে বাড়ি থেকে ১৬২ কিলোমিটার দূরে পাড়ি জমিয়েছি। ২০১৬ সালে সেই ঘর থেকে বেরিয়েছি আর আনুষ্ঠানিকতায় বাড়ি ফেরা হয়নি। মাসে, ছয় মাসে কিংবা ঈদে বাড়ি যাই।যান্ত্রিক শহরে এখন সব কিছুই যান্ত্রিক মনে হয়। এখানে নেই মায়ের আদরমাখা শাসন। বাবার সারাক্ষণ তদারকির চাপও নেই।

চারদিক কেবল কংক্রিটের আবরণে ছেয়ে আছে।গোটা দশক ধরে আস্ত একটি দালানের চিলেকোঠায় যৌবন ফুরিয়ে যাচ্ছেএখানে প্রথম অপশনটি একটু কঠিন ছিল, যদিও নিজে গিয়ে শপিং করার মজা আলাদা। কিন্তু শপিং থেকে বাড়ি ফেরার পর নিজের পছন্দে কেনা কাপড় নিজের কাছেই অপছন্দনীয় হয়ে ওঠে। এই আফসোস বুকে বয়ে নিয়ে কত ঈদ কাটিয়েছি।দ্বিতীয় অপশন ছিল খুবই চমকপ্রদ। কারণ বাবা শহরের শপিং সেন্টার থেকে নিয়ে গেছেন, মানে অবশ্যই দারুণ কাপড় এনেছেন। এই বিশ্বাসেই বুক ফুলিয়ে কাজিনদের সঙ্গে কাপড় সুন্দরের প্রতিযোগিতায় জিততে চাওয়ার যে তৃপ্তি, সেটি পৃথিবীর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।গ্রামে রাত ৮টার দিকে ঘুমিয়ে পড়তাম। বাবা যেদিন শহরে কেনাকাটা করতে আসতেন, সেদিন তাঁর ফিরতে রাত হতো। প্রায় রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ। আমরা বাবা আসা পর্যন্ত জেগে থাকতাম। মা বকাবকি করলেও ঘুমাতাম না। রাত ১২টার কাঁটা ছুঁই ছুঁই। ততক্ষণে মা ঘুমিয়েছেন।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট সংবাদ
বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

বাবার পছন্দে কিনব

Update Time : 01:50:13 pm, Tuesday, 25 March 2025
গোটা এক দশক ফুরিয়ে গেল বর্ণহীন ও নিস্তেজ ঈদ কাটিয়ে। পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার গড়ার যুদ্ধে শৈশবের সোনালি দিনগুলোকে বিসর্জন দিয়ে বাড়ি থেকে ১৬২ কিলোমিটার দূরে পাড়ি জমিয়েছি। ২০১৬ সালে সেই ঘর থেকে বেরিয়েছি আর আনুষ্ঠানিকতায় বাড়ি ফেরা হয়নি। মাসে, ছয় মাসে কিংবা ঈদে বাড়ি যাই।যান্ত্রিক শহরে এখন সব কিছুই যান্ত্রিক মনে হয়। এখানে নেই মায়ের আদরমাখা শাসন। বাবার সারাক্ষণ তদারকির চাপও নেই।

চারদিক কেবল কংক্রিটের আবরণে ছেয়ে আছে।গোটা দশক ধরে আস্ত একটি দালানের চিলেকোঠায় যৌবন ফুরিয়ে যাচ্ছেএখানে প্রথম অপশনটি একটু কঠিন ছিল, যদিও নিজে গিয়ে শপিং করার মজা আলাদা। কিন্তু শপিং থেকে বাড়ি ফেরার পর নিজের পছন্দে কেনা কাপড় নিজের কাছেই অপছন্দনীয় হয়ে ওঠে। এই আফসোস বুকে বয়ে নিয়ে কত ঈদ কাটিয়েছি।দ্বিতীয় অপশন ছিল খুবই চমকপ্রদ। কারণ বাবা শহরের শপিং সেন্টার থেকে নিয়ে গেছেন, মানে অবশ্যই দারুণ কাপড় এনেছেন। এই বিশ্বাসেই বুক ফুলিয়ে কাজিনদের সঙ্গে কাপড় সুন্দরের প্রতিযোগিতায় জিততে চাওয়ার যে তৃপ্তি, সেটি পৃথিবীর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।গ্রামে রাত ৮টার দিকে ঘুমিয়ে পড়তাম। বাবা যেদিন শহরে কেনাকাটা করতে আসতেন, সেদিন তাঁর ফিরতে রাত হতো। প্রায় রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ। আমরা বাবা আসা পর্যন্ত জেগে থাকতাম। মা বকাবকি করলেও ঘুমাতাম না। রাত ১২টার কাঁটা ছুঁই ছুঁই। ততক্ষণে মা ঘুমিয়েছেন।