Dhaka 4:18 pm, Sunday, 16 March 2025

ট্রাম্প মনোনীত বিশেষ দূতের ইমরান খানের পক্ষের টুইট নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী রিচার্ড গ্রেনেল পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কারামুক্তির জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্ট করেছেন। এ ঘটনায় সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক পরিসরে তাকে নিয়ে এখন প্রবল আলোচনা শুরু হয়েছে।

২৬ নভেম্বরে ইমরান খানের কারামুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকারীরা ইসলামাবাদে সমবেত হলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পাকিস্তান সরকার সহিংস দমনপীড়ন চালায় এবং তার ফলেই পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে। গ্রেনেল তখন তড়িঘড়ি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) ইমরান খানকে সমর্থন জানিয়ে লেখেন, ‘ইমরান খানকে মুক্ত করুন!’

যদিও প্রথমদিকে তার পোস্ট তেমন মনোযোগ আকর্ষণ করেনি, তবে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ও এর সমর্থকরা ১৫ ডিসেম্বরে এই পোস্টকে জোরালভাবে প্রচার করতে শুরু করে। ইতোমধ্যে ট্রাম্প আসন্ন প্রশাসনের বৈশ্বিক মিশনে তার বিশেষ দূত হিসেবে গ্রেনেলকে মনোনীত করেছেন।

পাকিস্তানের উল্লেখযোগ্য বার্তাসংস্থা জিও নিউজ চ্যানেলের বিরুদ্ধে প্রায়শই অভিযোগ করা হয়, তারা দেশটির সামরিক প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। এই চ্যানেল গ্রেনেলের নির্বাচন নিয়ে প্রতিবেদন করতে গিয়ে এক্সে শিরোনাম দিয়েছিল, ‘সমকামী রিচার্ড গ্রেনেলকে বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ করলেন ট্রাম্প।’

যুক্তরাষ্ট্রের মনোনীত দূত এর প্রত্যুত্তরে তার বার্তায় পুনরায় বলেন, ‘আমি আবারো বলব যে ইমরান খানকে মুক্ত করুন।’

তিনি পরবর্তী পোস্টে উল্লেখ করেন যে তার আগের ট্যুইট এক কোটি মানুষ দেখেছে।

গ্রেনেল বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব সামলেছেন, যেমন জার্মানিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, সার্বিয়া ও কসোভোর শান্তি বিষয়ক সমঝোতায় বিশেষ প্রেসিডেন্সিয়াল দূত এবং ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম কার্যকালে (২০১৭-২০২১) জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের কার্যনির্বাহী অধিকর্তা ছিলেন তিনি।

পাকিস্তানি টেলিভিশন টক শোতে একাধিক ধারাভাষ্যকার গ্রেনেলের এই ট্যুইটগুলিকে প্রচার পাওয়ার কৌশল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অনেকে আবার সতর্ক করেছেন, ইসলামাবাদের সথে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সম্পর্কের ওপর এটি শেষ পর্যন্ত প্রভাব ফেলতে পারে।

পাকিস্তানের কিছু সমালোচক গ্রেনেলের এক্স অ্যাকাউন্টের সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। গ্রেনেল দ্রুত এই সংশয়ের জবাবে ট্যুইট করে বলেছেন, ‘আমি যে আসল তা আমি কিভাবে প্রমাণ করব?’

গত মাসে পাকিস্তানের রাজধানীতে বিরোধীদের বিক্ষোভ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি এলিসা স্লটকিন এক্সে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এর জবাবে গ্রেনেল শনিবার সর্বশেষ খানপন্থী ট্যুইট করেছেন।

স্লটকিন লিখেছেন, ‘পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে নাগরিকদের বাক-স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে রক্ষা করতে হবে, আইন লঙ্ঘনকারীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে এবং পাকিস্তানের গণতন্ত্রকে তুলে ধরতে হবে।’
সূত্র : ভিওএ

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

ট্রাম্প মনোনীত বিশেষ দূতের ইমরান খানের পক্ষের টুইট নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা

Update Time : 10:15:58 am, Tuesday, 24 December 2024

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী রিচার্ড গ্রেনেল পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কারামুক্তির জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্ট করেছেন। এ ঘটনায় সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক পরিসরে তাকে নিয়ে এখন প্রবল আলোচনা শুরু হয়েছে।

২৬ নভেম্বরে ইমরান খানের কারামুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকারীরা ইসলামাবাদে সমবেত হলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পাকিস্তান সরকার সহিংস দমনপীড়ন চালায় এবং তার ফলেই পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে। গ্রেনেল তখন তড়িঘড়ি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) ইমরান খানকে সমর্থন জানিয়ে লেখেন, ‘ইমরান খানকে মুক্ত করুন!’

যদিও প্রথমদিকে তার পোস্ট তেমন মনোযোগ আকর্ষণ করেনি, তবে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ও এর সমর্থকরা ১৫ ডিসেম্বরে এই পোস্টকে জোরালভাবে প্রচার করতে শুরু করে। ইতোমধ্যে ট্রাম্প আসন্ন প্রশাসনের বৈশ্বিক মিশনে তার বিশেষ দূত হিসেবে গ্রেনেলকে মনোনীত করেছেন।

পাকিস্তানের উল্লেখযোগ্য বার্তাসংস্থা জিও নিউজ চ্যানেলের বিরুদ্ধে প্রায়শই অভিযোগ করা হয়, তারা দেশটির সামরিক প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। এই চ্যানেল গ্রেনেলের নির্বাচন নিয়ে প্রতিবেদন করতে গিয়ে এক্সে শিরোনাম দিয়েছিল, ‘সমকামী রিচার্ড গ্রেনেলকে বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ করলেন ট্রাম্প।’

যুক্তরাষ্ট্রের মনোনীত দূত এর প্রত্যুত্তরে তার বার্তায় পুনরায় বলেন, ‘আমি আবারো বলব যে ইমরান খানকে মুক্ত করুন।’

তিনি পরবর্তী পোস্টে উল্লেখ করেন যে তার আগের ট্যুইট এক কোটি মানুষ দেখেছে।

গ্রেনেল বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব সামলেছেন, যেমন জার্মানিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, সার্বিয়া ও কসোভোর শান্তি বিষয়ক সমঝোতায় বিশেষ প্রেসিডেন্সিয়াল দূত এবং ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম কার্যকালে (২০১৭-২০২১) জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের কার্যনির্বাহী অধিকর্তা ছিলেন তিনি।

পাকিস্তানি টেলিভিশন টক শোতে একাধিক ধারাভাষ্যকার গ্রেনেলের এই ট্যুইটগুলিকে প্রচার পাওয়ার কৌশল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অনেকে আবার সতর্ক করেছেন, ইসলামাবাদের সথে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সম্পর্কের ওপর এটি শেষ পর্যন্ত প্রভাব ফেলতে পারে।

পাকিস্তানের কিছু সমালোচক গ্রেনেলের এক্স অ্যাকাউন্টের সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। গ্রেনেল দ্রুত এই সংশয়ের জবাবে ট্যুইট করে বলেছেন, ‘আমি যে আসল তা আমি কিভাবে প্রমাণ করব?’

গত মাসে পাকিস্তানের রাজধানীতে বিরোধীদের বিক্ষোভ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি এলিসা স্লটকিন এক্সে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এর জবাবে গ্রেনেল শনিবার সর্বশেষ খানপন্থী ট্যুইট করেছেন।

স্লটকিন লিখেছেন, ‘পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে নাগরিকদের বাক-স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে রক্ষা করতে হবে, আইন লঙ্ঘনকারীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে এবং পাকিস্তানের গণতন্ত্রকে তুলে ধরতে হবে।’
সূত্র : ভিওএ