Dhaka 1:24 am, Saturday, 15 March 2025

ছবির মতো সুন্দর হয়েও পর্যটক যায় না যে দেশে

ছবির মতো সুন্দর এক দেশ। প্রাকৃতিক গ্যাসের বিশাল মজুদ, সোনা-রুপার ঝলমলে প্রাসাদ, আর মনোমুগ্ধকর স্থাপত্যের অপরূপ সমাহার—সব মিলিয়ে যেন এক স্বপ্নপুরী। কিন্তু, এত বৈচিত্র্য, এত ঐশ্বর্যের মাঝে যেন এক অদৃশ্য পর্দা টাঙানো। কোথাও কোনো পর্যটকের আনাগোনা নেই। যেখানে আরব আমিরাত, আমেরিকা, কিংবা থাইল্যান্ড পর্যটকদের পদচারণায় মুখর, সেখানে এই অনন্য সৌন্দর্যের দেশ যেন পড়ে আছে একাকী, নিস্তব্ধ।

প্রশ্ন হলো, কেনো? এতো সৌন্দর্য থাকা সত্ত্বেও কেনো পর্যটকদের কাছে এই দেশটি এক রহস্য? এর পেছনে কি কোনো গোপন কারণ লুকিয়ে আছে? কোনো অজানা রহস্য যা পর্যটকদের দূরে রাখছে? চলুন তবে জেনে নিই।

মধ্য এশিয়ার এক রহস্যময় এই দেশ তুর্কমেনিস্তান, যা ক্যাস্পিয়ান সাগরের পূর্বে অবস্থিত। দেশটির রাজধানী আশগাবাত, যা সাদা মার্বেলের শহর হিসেবে পরিচিত। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী, আশগাবাত বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সাদা মার্বেলের ভবনসমৃদ্ধ শহর। শহরটির স্থাপত্যশৈলী ও নকশা মনোমুগ্ধকর।

দেশটির আরেকটি আকর্ষণীয় স্থান হলো দারভাজা গ্যাস ক্রেটার, যা “নরকের দরজা” নামে পরিচিত। এটি একটি বিশাল প্রাকৃতিক গ্যাসের গর্ত, যা ১৯৭১ সাল থেকে জ্বলছে। এই অগ্নিগর্তটি পর্যটকদের জন্য এক বিস্ময়কর স্থান, তবে সেখানে পৌঁছানো কিংবা ভ্রমণ করা সহজ নয়।

মূলত মরুভূমি আর প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর, এই দেশটি সারা বিশ্ব থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। যেখানে ভ্রমণ করতে চাইলেও ভিসা পাওয়া অত্যন্ত কঠিন, আর পেলেও নেইস্বাধীনভাবে ঘোরার অনুমতি। পর্যটকদের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট গাইডের সঙ্গে চলার বাধ্যবাধকতা। অনেক এলাকায় ফটোগ্রাফি নিষিদ্ধ, এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে যোগাযোগেও বিধিনিষেধ রয়েছে। এই কঠোর নিয়ন্ত্রণের ফলে দেশটি বিশ্বের অন্যতম বন্ধ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত।

তুর্কমেনিস্তানের সরকার জনজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ আরোপের ফলে দেশের নাগরিকরাও স্বাধীনভাবে যেখানে-সেখানে ঘুরতে পারেন না বলে জানা যায়। তুর্কমেনিস্তান এমন এক দেশ, যেখানে দেশের মানুষও বাইরের পৃথিবীর অনেক কিছু থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। দেশটির সরকার নাগরিকদের জন্য বিনামূল্যে পানি, বিদ্যুৎ এবং গ্যাসসহ কিছু সুবিধা প্রদান করে। তবে দেশে পর্যটন খাতের অবকাঠামো প্রায় নেই বললেই চলে। আন্তর্জাতিক মানের হোটেল বা রেস্টুরেন্টের অভাব থাকায় যারা যেতে চান তাদেরও ভ্রমণ করতে হয় নানা অসুবিধার মধ্যে দিয়ে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

ছবির মতো সুন্দর হয়েও পর্যটক যায় না যে দেশে

Update Time : 05:44:51 pm, Sunday, 26 January 2025

ছবির মতো সুন্দর এক দেশ। প্রাকৃতিক গ্যাসের বিশাল মজুদ, সোনা-রুপার ঝলমলে প্রাসাদ, আর মনোমুগ্ধকর স্থাপত্যের অপরূপ সমাহার—সব মিলিয়ে যেন এক স্বপ্নপুরী। কিন্তু, এত বৈচিত্র্য, এত ঐশ্বর্যের মাঝে যেন এক অদৃশ্য পর্দা টাঙানো। কোথাও কোনো পর্যটকের আনাগোনা নেই। যেখানে আরব আমিরাত, আমেরিকা, কিংবা থাইল্যান্ড পর্যটকদের পদচারণায় মুখর, সেখানে এই অনন্য সৌন্দর্যের দেশ যেন পড়ে আছে একাকী, নিস্তব্ধ।

প্রশ্ন হলো, কেনো? এতো সৌন্দর্য থাকা সত্ত্বেও কেনো পর্যটকদের কাছে এই দেশটি এক রহস্য? এর পেছনে কি কোনো গোপন কারণ লুকিয়ে আছে? কোনো অজানা রহস্য যা পর্যটকদের দূরে রাখছে? চলুন তবে জেনে নিই।

মধ্য এশিয়ার এক রহস্যময় এই দেশ তুর্কমেনিস্তান, যা ক্যাস্পিয়ান সাগরের পূর্বে অবস্থিত। দেশটির রাজধানী আশগাবাত, যা সাদা মার্বেলের শহর হিসেবে পরিচিত। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী, আশগাবাত বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সাদা মার্বেলের ভবনসমৃদ্ধ শহর। শহরটির স্থাপত্যশৈলী ও নকশা মনোমুগ্ধকর।

দেশটির আরেকটি আকর্ষণীয় স্থান হলো দারভাজা গ্যাস ক্রেটার, যা “নরকের দরজা” নামে পরিচিত। এটি একটি বিশাল প্রাকৃতিক গ্যাসের গর্ত, যা ১৯৭১ সাল থেকে জ্বলছে। এই অগ্নিগর্তটি পর্যটকদের জন্য এক বিস্ময়কর স্থান, তবে সেখানে পৌঁছানো কিংবা ভ্রমণ করা সহজ নয়।

মূলত মরুভূমি আর প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর, এই দেশটি সারা বিশ্ব থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। যেখানে ভ্রমণ করতে চাইলেও ভিসা পাওয়া অত্যন্ত কঠিন, আর পেলেও নেইস্বাধীনভাবে ঘোরার অনুমতি। পর্যটকদের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট গাইডের সঙ্গে চলার বাধ্যবাধকতা। অনেক এলাকায় ফটোগ্রাফি নিষিদ্ধ, এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে যোগাযোগেও বিধিনিষেধ রয়েছে। এই কঠোর নিয়ন্ত্রণের ফলে দেশটি বিশ্বের অন্যতম বন্ধ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত।

তুর্কমেনিস্তানের সরকার জনজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ আরোপের ফলে দেশের নাগরিকরাও স্বাধীনভাবে যেখানে-সেখানে ঘুরতে পারেন না বলে জানা যায়। তুর্কমেনিস্তান এমন এক দেশ, যেখানে দেশের মানুষও বাইরের পৃথিবীর অনেক কিছু থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। দেশটির সরকার নাগরিকদের জন্য বিনামূল্যে পানি, বিদ্যুৎ এবং গ্যাসসহ কিছু সুবিধা প্রদান করে। তবে দেশে পর্যটন খাতের অবকাঠামো প্রায় নেই বললেই চলে। আন্তর্জাতিক মানের হোটেল বা রেস্টুরেন্টের অভাব থাকায় যারা যেতে চান তাদেরও ভ্রমণ করতে হয় নানা অসুবিধার মধ্যে দিয়ে।