
সাহ্রি রোজা ও রমজানের অতি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। সাহ্রি শব্দের অর্থ শেষরাতের খাবার। ইসলামি পরিভাষায় রোজা বা সাওম পালনের উদ্দেশ্যে ভোররাতে সুবহে সাদিকের পূর্বে যে আহার গ্রহণ করা হয়, তা হলো সাহ্রি। সাহ্রি একটি বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ সুন্নত। পূর্ববর্তী উম্মতদের রোজায় সাহ্রির বিধান ছিল না। তখন নিয়ম ছিল, সন্ধ্যারাতে এশার ওয়াক্তের মধ্যে ঘুমানোর আগেই পানাহার শেষ করতে হতো। ইসলামের প্রাথমিক যুগেও ওই নিয়ম বিদ্যমান ছিল।
‘অর্ধরাত্রির পর থেকে সাহ্রির সময় শুরু হয়।’ (মোল্লা আলী কারি রা., মিরকাত শরহে মিশকাত)। ইমাম জামাখ্শারি (রহ.) ও ফকিহ আবুল লাইস ছামারকান্দী (রহ.)–এর মতে সাহ্রির সময় হলো রাতের শেষ তৃতীয়াংশ। সাহ্রি বিলম্বে খাওয়া সুন্নত। তবে সন্দেহের সময় পর্যন্ত বিলম্ব করা উচিত নয়, তার পূর্বেই সাহ্রির নিরাপদ সময়সীমার মধ্যে পানাহার শেষ করতে হবে। রাসুলে করিম (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সাহ্রি খাও; যদি তা এক ঢোঁক পানিও হয়।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘তোমরা সাহ্রি খাও; যদি এক লুকমা খাদ্যও হয়।’ (মুসলিম)। অর্থাৎ যেকোনো প্রকার ও যেকোনো পরিমাণ খাদ্য বা পানীয় দ্বারাই সাহ্রির সুন্নত পালিত হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে সাহ্রি গ্রহণ না করলে সুন্নত তরক হবে।
যদি কখনো ফরজ গোসল করে সাহ্রি খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় না থাকে; তখন অজু করে বা হাত–মুখ ধুয়ে আগে সাহ্রি খেয়ে নিতে হবে। সাহ্রি একটি ইবাদত, এই ইবাদতকে ‘সাহ্রি পার্টি’র মতো কোনো আনুষ্ঠানিকতা বা এমন কোনো রসুম রেওয়াজ বা প্রথায় পরিণত করা যাবে না, যাতে এর ধর্মীয় মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় ।