
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে পাগলা কুকুরের উপদ্রব। গত এক সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে অন্তত ৪০ জন মানুষ কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে গেলেও সেখানে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় তাদের পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়।কুকুরের কামড়ের সবচেয়ে বেশি মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে ভবেরচর ইউনিয়নে। শুধু ভবেরচর কলেজ রোড এলাকার একটি মহল্লাতেই পাঁচজন কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন। আহতদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু।অবস্থা এ রকম কুকুরের ভয়ে ছোট বাচ্চাদের একা ছাড়ছেন না অভিভাবকরা।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গল ও বুধবার দুই দিনে ১১ জন কুকুরে কামড় দেওয়া রোগী হাসপাতালে এসেছেন। সবচেয়ে বেশি রোগী এসেছেন ভবেরচর ইউনিয়ন থেকে। হাসপাতালে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা অথবা মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যারা সেখানে যেতে চাচ্ছেন না, তারা নিকটস্থ ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন কিনে আনলে তাদের দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।বাউশিয়া ইউনিয়নের বড়কান্দি গ্রামের ফাহিম বলেন, বাসা থেকে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় কুকুর তার পায়ে কামড় দেয়।বাসায় গিয়ে বিষয়টি তার মাকে জানালে তিনি তাকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে এসে শুনেন ভ্যাকসিন নেই। ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন কিনে আনলে হাসপাতালে দেওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে।
ভবেরচর কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দাশাহিনুর বলেন, বাড়ির সামনে হাঁটাহাঁটি করার সময় বুধবার কুকুর তাকে কামড় দেয়। পাগলা কুকুরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। একই এলাকার আরেক বাসিন্দা রানা বলেন,রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় একটি পাগলা কুকুর তাকে কামড় দেয়। এতে তার চামড়া কেটে রক্ত বের হয়ে যায়। এই একই কুকুর কলেজ রোড এলাকার বেশ কয়েকজনকে কামড়েছে।
পৈক্ষার পাড় গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার একটি পাগলা কুকুর তাকে কামড় দেয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালে ভ্যাকসিন না থাকায় ৫০০ টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন কিনে দিতে হয়েছে তাকে। ফুল কোর্স কমপ্লিট করতে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার ভ্যাকসিন লাগবে। সরকারিভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো।গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমাইয়া ইয়াকুব বলেন,স্বাভাবিকভাবে উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে কুকুরে কামড়ানোর ভ্যাকসিন দেওয়া হয় না।তবে পরিস্থিতি অনেক খারাপ হলে সিভিল সার্জনের অনুমতিক্রমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায়।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে। আমরা রোগীদের সেখানে অথবা ঢাকা যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। আর্থিকভাবে অসচ্ছল এ রকম ব্যক্তিদের সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে নির্দিষ্ট হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’