Dhaka 3:49 am, Sunday, 16 March 2025

শিক্ষক সমিতি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা জবি নীলদলের   

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) নির্বাচন ২০২৫ বর্জনের ঘোষনা দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল শিক্ষকবৃন্দের সংগঠন নীলদল। এই বিষয়ে জবি শিক্ষক সমিতি নির্বাচন ২০২৫ এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল আলীম বরাবর লিখিত আবেদন করে জবি নীলদল। নীলদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১২ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে একটি পেশাগত সংগঠন হিসেবে প্রতিবছর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শি ক্ষকদের সম্মান-মর্যাদা বৃদ্ধি, শিক্ষার সামগ্রীক মানোন্নয়নে শিক্ষক দের প্রতিনিধি হিসেবে অত্যন্তদৃঢ় ও গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালন করে আসছে। । তবে এবারের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিত হুমকি ও চাপে বাধার সম্মুখীন হওয়ায়, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
গত ৮ ডিসেম্বর মনোনয়ন ফরম উত্তোলনের সময়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কিছু শিক্ষার্থী নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে নীলদলের শিক্ষকদের মনোনয়ন ফরম প্রদান বন্ধ করতে হুমকি দেয়। এছাড়াও, দশজন শিক্ষক লিখিতভাবে দাবি করেন, নীলদলের শিক্ষকদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার জন্য। নীলদল এই ঘটনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর আঘাত এবং নিন্দনীয় বলে উল্লেখ করেছে। তাদের দাবি, এসব চাপ ও হুমকি শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ, হতাশা এবং ভীতির সৃষ্টি করেছে। নীলদলের শিক্ষকেরা জানান, এই অগণতান্ত্রিক কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নিজেদের সম্মান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি রক্ষায় এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষকদের এমন আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে নীলদল মনে করে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো: আবদুল আলীম বলেন,”এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। আমরা সকল শিক্ষকের জন্য ফরম পূরণের দ্বার উন্মুক্ত করে রেখেছি। সে কোনো শিক্ষক ফরম পূরণ করে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। কেউ নির্বাচন বর্জন করলেও করতে পারেন। আমরা নির্বাচন কমিশনে যে পাঁচজন আছি সবাই একত্রেই সিদ্ধান্ত নিই। কিছু শিক্ষক এবং বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমার কাছে যে লিখিত চিঠি এসেছে তা আমরা এখনো বিশেষ বিবেচনায় নিই নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো শিক্ষক চাইলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন। জবি নীলদলের পক্ষ থেকে নির্বাচন বর্জন প্রসঙ্গে যে চিঠি এসেছে সেখানে কারো নাম উল্লেখ নেই। নীলদলেরও একাধিক ভাগ আছে। অতএব কেউ কেউ নির্বাচন বর্জন করলে এতে নির্বাচনে প্রভাব পরবে না।”
জবি নীলদলের একাধিক সিনিয়র শিক্ষক বলেন, ” বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের যে চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকের মধ্যেই ক্ষোভ, হতাশা এবং ভীতির সঞ্চার করেছে। এমতাবস্থায় সহকর্মীদের সম্মান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক ভাবমূর্তির কথা বিবেচনা করে আমরা নির্বাচন বর্জন করছি।”
নাম প্রকাশে অসম্মতি জানানোর কারণ প্রসঙ্গে বলেন যে, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক বিষয়ে নীলদলের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। ব্যক্তিকেন্দ্রিক কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।”

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

শিক্ষক সমিতি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা জবি নীলদলের   

Update Time : 09:12:07 am, Tuesday, 10 December 2024
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) নির্বাচন ২০২৫ বর্জনের ঘোষনা দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল শিক্ষকবৃন্দের সংগঠন নীলদল। এই বিষয়ে জবি শিক্ষক সমিতি নির্বাচন ২০২৫ এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল আলীম বরাবর লিখিত আবেদন করে জবি নীলদল। নীলদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১২ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে একটি পেশাগত সংগঠন হিসেবে প্রতিবছর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শি ক্ষকদের সম্মান-মর্যাদা বৃদ্ধি, শিক্ষার সামগ্রীক মানোন্নয়নে শিক্ষক দের প্রতিনিধি হিসেবে অত্যন্তদৃঢ় ও গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালন করে আসছে। । তবে এবারের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিত হুমকি ও চাপে বাধার সম্মুখীন হওয়ায়, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
গত ৮ ডিসেম্বর মনোনয়ন ফরম উত্তোলনের সময়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কিছু শিক্ষার্থী নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে নীলদলের শিক্ষকদের মনোনয়ন ফরম প্রদান বন্ধ করতে হুমকি দেয়। এছাড়াও, দশজন শিক্ষক লিখিতভাবে দাবি করেন, নীলদলের শিক্ষকদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার জন্য। নীলদল এই ঘটনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর আঘাত এবং নিন্দনীয় বলে উল্লেখ করেছে। তাদের দাবি, এসব চাপ ও হুমকি শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ, হতাশা এবং ভীতির সৃষ্টি করেছে। নীলদলের শিক্ষকেরা জানান, এই অগণতান্ত্রিক কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নিজেদের সম্মান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি রক্ষায় এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষকদের এমন আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে নীলদল মনে করে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো: আবদুল আলীম বলেন,”এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। আমরা সকল শিক্ষকের জন্য ফরম পূরণের দ্বার উন্মুক্ত করে রেখেছি। সে কোনো শিক্ষক ফরম পূরণ করে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। কেউ নির্বাচন বর্জন করলেও করতে পারেন। আমরা নির্বাচন কমিশনে যে পাঁচজন আছি সবাই একত্রেই সিদ্ধান্ত নিই। কিছু শিক্ষক এবং বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমার কাছে যে লিখিত চিঠি এসেছে তা আমরা এখনো বিশেষ বিবেচনায় নিই নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো শিক্ষক চাইলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন। জবি নীলদলের পক্ষ থেকে নির্বাচন বর্জন প্রসঙ্গে যে চিঠি এসেছে সেখানে কারো নাম উল্লেখ নেই। নীলদলেরও একাধিক ভাগ আছে। অতএব কেউ কেউ নির্বাচন বর্জন করলে এতে নির্বাচনে প্রভাব পরবে না।”
জবি নীলদলের একাধিক সিনিয়র শিক্ষক বলেন, ” বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের যে চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকের মধ্যেই ক্ষোভ, হতাশা এবং ভীতির সঞ্চার করেছে। এমতাবস্থায় সহকর্মীদের সম্মান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক ভাবমূর্তির কথা বিবেচনা করে আমরা নির্বাচন বর্জন করছি।”
নাম প্রকাশে অসম্মতি জানানোর কারণ প্রসঙ্গে বলেন যে, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক বিষয়ে নীলদলের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। ব্যক্তিকেন্দ্রিক কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।”