
রাজনৈতিক অস্থিরতা, আর্থিক দুর্দশা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ক্রমবর্ধমান চাপের ফলে দেশে শিল্প খাত ক্রমশ গভীরতর সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। দেশজুড়ে উদ্যোক্তারা ব্যাপক বিশৃঙ্খলার কথা জানাচ্ছেন, কেউ কেউ এই পরিস্থিতিকে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের ওপর ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ হিসেবে বর্ণনা করছেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ শিল্পপতি তীব্র তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য একটি উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে। তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই থেকে মার্চ) শিল্প পণ্যের আমদানিতে খোলা এলসির পরিমাণ উদ্বেগজনক হারে কমেছে।
এই সময়ে টেক্সটাইল যন্ত্রপাতির জন্য এলসি খোলার পরিমাণ ১৬.০৭ শতাংশ কমেছে, যেখানে সেটেলমেন্ট ২১.৬৬ শতাংশ কমেছে। চামড়াশিল্পের এলসি খোলার পরিমাণও ১৮.১৮ শতাংশ কমেছে, যদিও সেটেলমেন্ট ২.৪৬ শতাংশ সামান্য বেড়েছে। ওষুধশিল্প আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ খাতে এলসি খোলার পরিমাণ ২১.৪৪ শতাংশ কমেছে এবং সেটেলমেন্ট ৪২.৫২ শতাংশ কমেছে।
প্যাকেজিং উপকরণের এলসি খোলার পরিমাণ ৩৫.৫২ শতাংশ কমেছে, সেটেলমেন্ট ৩৭.৬৯ শতাংশ কমেছে। কাঁচা তুলার জন্য এলসি খোলার পরিমাণ ৯.২৯ শতাংশ কমেছে এবং সেটেলমেন্ট ২.৫৩ শতাংশ কমেছে। লোহা ও ইস্পাতের স্ক্র্যাপ, ক্লিংকার এবং চুনাপাথর, কৃষি যন্ত্রপাতি যেমন ট্রাক্টর এবং পাওয়ার টিলার, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার এবং মধ্যবর্তী পণ্যসহ অন্যান্য শিল্প আমদানি হ্রাস পেয়েছে।তবে কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল পাটের এলসি খোলার ক্ষেত্রে। এই খাতে এলসি খোলার পরিমাণ ৫৩.৮৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যদিও সেটেলমেন্ট ১৪.৫৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। পোশাক খাত কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। যেখানে এলসি খোলার পরিমাণ ২০.৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সেটেলমেন্ট ৫.৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ে মূলধন যন্ত্রপাতি আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত এলসি খোলার পরিমাণ ২৮.৬৮ শতাংশ কমে ১ হাজার ৮০৪ মিলিয়ন থেকে ১ হাজার ৩৩৫ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। সেটেলমেন্টও ২৩.৮৬ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ২ হাজার ১৩৩ মিলিয়ন ডলার থেকে ১ হাজার ৫২১ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।