
শারজাহ’র শেখ সৌদ আল কাসিমি মসজিদ, যা বুখাতির মসজিদ নামে পরিচিত, রমজানের ২৫তম রাতে আধ্যাত্মিকতার এক অনবদ্য অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছে। এখন মসজিদটি ২৭তম রাত্রির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেটি ইসলামে লাইলাতু কদর হিসেবে পরিচিত। মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী, এই রাতটি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রথম কোরআন নাজিল হওয়ার রাত, যা অত্যন্ত পবিত্র ও আধ্যাত্মিক মুহূর্তে পরিপূর্ণ।
মঙ্গলবার রাতে শারজাহ’র আল শাহবা এলাকায় মসজিদ এবং আশপাশের সড়কগুলো ছিল পরিপূর্ণ জনসমুদ্রে। বিশেষ করে রমজানের শেষ দশদিন, যেগুলো কিয়ামু লাইল নামে পরিচিত, এই সময়ে হাজার হাজার মুসল্লি উপস্থিত হয়েছিলেন। মসজিদ কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ২ হাজার ৩০০ জন ধারণক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও সাত হাজার থেকে ১০ হাজার মুসল্লি এখানে অংশ নেন। ২৭তম রাতে এই সংখ্যা আরও তিনগুণ বেড়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।মসজিদ কর্তৃপক্ষ এবং স্বেচ্ছাসেবীরা সড়কগুলোতে উপাসকদের সাহায্য করতে কাজ করছেন। একটি বিশেষ দৃষ্টান্ত হচ্ছে উদয় নামক এক স্বেচ্ছাসেবী, যিনি পায়ে আঘাত পেয়েও সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি বলেন, যদি আমি দাঁড়াতে পারি, তবে আমি সেবা করতে পারি। এটি অন্তত আমি এই রাতে করতে পারি।
এছাড়া, পরিবারগুলো সড়কের পাশে নামাজের ম্যাট বিছিয়ে রেখেছিল, যা বৃহত্তর সমাগমের ইঙ্গিত দেয়। আবদুল কাদির ৫৫ বছর বয়সী এক সোর্সিং ম্যানেজার, তিনি তার দুই ছেলে আবদুল ও কায়ুমকে সঙ্গে নিয়ে নামাজ পড়তে আসেন। তিনি বলেন, এটা কিছুই নয়, আল্লাহর পক্ষ যা আসছে তার তুলনায়। ২৭তম রাতে পুরো আরব আমিরাত থেকে মানুষ আসবে।মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২৭তম রাতের জন্য আল শাহবা এলাকার অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলো গাড়ির চলাচলের জন্য বন্ধ রাখা হতে পারে। গাড়ি চালকদের হিলওয়ান এলাকা দিয়ে প্রবাহিত করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।এ আধ্যাত্মিক সমাবেশের কেন্দ্রে ছিলেন শেখ সালাহ বুখাতির, যিনি ৩৬ বছর ধরে এই মসজিদে লাইলাতু কদরের নামাজের পরিচালনা করছেন। তার কোরআন তেলাওয়াত শান্ত, স্থিতিশীল এবং গভীর আবেগপূর্ণ, যা রমজানের শেষ দশ রাতের সঙ্গে একত্রিত হয়ে সকলকে এক বিশেষ আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা প্রদান করে।