
একদিকে তীব্র গরম ও তাপপ্রবাহ অন্যদিকে বিভিন্ন ট্রেন নিদিষ্ট সময় থেকে চলছে কয়েক ঘন্টা করে বিড়ম্বে। যার কারণে প্লাটফর্মে অপেক্ষমান যাত্রীরা পড়ছে নানা বিপাকে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছে গরমের কারণে। আর এসব ট্রেন যাত্রীদের মাঝে ফ্রীতে শরবত ও পানি বিতরনণ করছে বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারের গরীবের রাজা নামে পরিচিত এক সমাজসেবী। গরীবের রাজা নামে খ্যাত আজিজুর হক রাজা তীব্র গরমে ট্রেন যাত্রী, পথশিশু, কুলি, স্টেশনে অপেক্ষা করা দিনমজুর ও পথচারীদের মাঝে বিনামূল্যে শরবত বিতরণ করছে। রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার সান্তাহার স্টেশনের প্লাটফর্মগুলোতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্লাটফর্মে অবস্থানরত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে এই ঠান্ডা শরবত বিতরণ করছেন গরীবের রাজা। শরবত বিতরণ কাজে সার্বিক সহযোগিতা করছেন তার সহযোগী রানা খান।
ট্রেনের জন্য অপেক্ষমান যাত্রী জান্নাত ফেরদৌস জানান, ট্রেন লেট থাকায় আর তীব্র গরম থাকায় স্টেশনে অপেক্ষা করতে খুব কষ্ট হয়। এই কষ্ট আরও বেড়ে যায় তৃষ্ণা পেলে। প্রতি বোতল পানি সর্বনিম্ন ১৫ টাকা আর জুসের বোতল ৩০ টাকা। পানি বা জুস আর কতই কিনে খাওয়া যায়। যাত্রীদের জন্য এই শরবতের ব্যবস্থা করাতে অনেকটা স্বস্তি পাচ্ছে যাত্রীরা। স্টেশনের কুলি আজমল আলী জানান, কর্মের জন্য বাহিরে আসতেই হয়। এই প্রচন্ড গরমে আমাদের কাজ করতে খুব সমস্যা হচ্ছে। শরীরে ঘাম ঝরে গলা শুকিয়ে যায়। গরীবের রাজার এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগে আমরা এই ঠান্ডা শরবত বিনামূল্যে পান করতে পারি। পথশিশু আরিফ হোসেন জানান, রাজা ভাই আমাদের নিয়মিত খাওয়ার ব্যবস্থা করে। গরমে খুব তৃষ্ণা লাগে। আমরা পানি ঠিক মত পাই না আর শরবত কিনতে পারি না। এই ঠান্ডা লেবুর শরবত খেয়ে শরীরে স্বস্তি ফিরে।
এ বিষয়ে গরীবের রাজা জানান, কয়েকদিন ধরে বাড়ছে তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনসাধারণ। বিশেষ করে দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়ছে চরম বিপাকে। ট্রেনের জন্য অপেক্ষা প্রচন্ড গরমে তৃষ্ণার্ত হচ্ছেন যাত্রীরা। এতে করে হিটস্ট্রোকের সম্ভবনা রয়েছে। তাদের কথা ভেবেই গুড় ও লেবুর মিশ্রিত ঠান্ডা শরবত তৈরি করে বিনামূল্য তা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি তৃষ্ণার্তদের। এ বিষয়ে সান্তাহারের সিনিয়র সাংবাদিক সাগর খান জানান, গরীবের রাজা নামক খ্যাত ব্যাক্তি শীতের সময় গরীব অসহায় ছিন্নমূল মানুষদের মাঝে কম্বল বিতরণ করে থাকেন। তাছাড়া গরিব অসহায় মানুষদের মাঝে ফ্রী খাবার বিতরণ ও কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা সহ নানান জনকল্যাণমূলক কাজ নিজ অর্থায়নে করে থাকেন। তাই তিনি অত্র এলাকায় গরীবের রাজা নামে খ্যাতি লাভ করেছেন।