
কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ইবাদত। সামর্থ্যবান নর-নারীর ওপর যা ওয়াজিব। শরিয়তের ভাষায় সামর্থ্যবান বলা হয় যার নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে। নিম্নে নিসাব ও তার ব্যাখ্যা তুলে ধরা হলো।
কোরআন ও হাদিস দ্বারা কোরবানি ওয়াজিব হওয়া প্রমাণিত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি তোমার রবের জন্য নামাজ আদায় করো এবং কোরবানি করো।’ (সুরা : কাউসার, আয়াত : ২)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি করল না সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২১২৩)
ওয়াজিব হওয়ার শর্ত : সহজ করে বললে, যার ওপর জাকাত ওয়াজিব, তার ওপর কোরবানিও ওয়াজিব।
প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন স্বাধীন মুসলিম নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব। যদি সে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়। (আদ-দুররুল মুখতার : ৫/২১৯)
নিসাবের পরিচয় : যার কাছে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি রুপা আছে সেই নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক। একইভাবে যার কাছে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ বা এমন প্রয়োজনাতিরিক্ত জিনিস যার মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ বা বেশি হয় সে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক।
কারো কাছে যদি এই পরিমাণ স্বর্ণ, রৌপ্য বা টাকা-পয়সা না থাকে যেগুলো কোনো একটি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ হয়, কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। (আল মুহিতুল বুরহানি : ৮/৪৫৫)
নারীদের জন্য সতর্কতা : সমাজের বহু নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব হওয়ার পরও তারা অজ্ঞতা বা অসতর্কতার কারণে কোরবানি দেন না।
স্বর্ণ ও রুপার অলংকার, অথবা কিছু অলংকার ও কিছু নগদ অর্থ থাকার কারণে তাদের অনেকের ওপরই কোরবানি ওয়াজিব হয়ে যায়। তাই এই বিষয়ে তাদের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক।