
রেকো ডিক খনি প্রকল্পের শতকরা ১৫ ভাগ শেয়ার সৌদি আরবের কাছে বিক্রি করে দেয়া
অনুমোদন করেছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদ। আন্তঃসরকার চুক্তির ভিত্তিতে এই
শেয়ার বিক্রি করা হবে। চুক্তির মূল্যমান ৫৪ কোটি ডলার। দুটি ধাপে তারা এই অর্থ বিনিয়োগ
করবে। প্রথম ধাপে শতকরা ১০ ভাগ শেয়ারের জন্য পরিশোধ করবে ৩৩ কোটি ডলার।
দ্বিতীয় ধাপে বাকি শতকরা ৫ ভাগ শেয়ারের জন্য পরিশোধ করবে ২১ কোটি ডলার। রেকো
ডিক খনিজ প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ তামা ও স্বর্ণ মজুদ আছে বলে ধারণা করা হয়। এই সম্পদ
উদ্ধার করতে পারলে ভবিষ্যতে পাকিস্তানের অর্থনীতি হবে সমৃদ্ধ। বর্তমানে এ খনিজ
প্রকল্পের ৫০ শতাংশের মালিকানা যৌথভাবে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকার ও বেলুচিস্তান
সরকারের। বাকি ৫০ শতাংশের মালিক বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা বা কোম্পানি। আলাদাভাবে
বেলুচিস্তানে খনিজ শিল্প খাতকে সমৃদ্ধ করতে বাড়তি ১৫ কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়
সৌদি ফান্ড ফর ডেভলপমেন্ট। তাছাড়া খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের
চ্যাগাই অঞ্চলে অবস্থিত রেকো ডিক খনি। সেখানে বিপুল পরিমাণে তামা ও স্বর্ণ জমা আছে।
রেকো ডিক খনিজ প্রকল্পকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তামা ও সোনার খনি হিসেবে গণ্য করা
হয়। ২০১১ সালে চুক্তিতে অনিয়মের উল্লেখ করে টেনিয়ান কপার কোম্পানিকে (টিসিসি) খনিজ আহরণের লিজ দিতে অস্বীকৃতি জানায় পাকিস্তান সরকার। টিসিসি হলো একটি যৌথ প্রতিষ্ঠান। এর সঙ্গে আছে ব্যারিক গোল্ড এবং অ্যান্তোফাগাস্টা মিনারেলস। কিন্তু রেকো ডিকে বিপুল পরিমাণ তামা ও স্বর্ণের উপস্থিতি অনুসন্ধানে দেখতে পায় টিসিসি। ফলে তারা এই খনির উন্নয়নে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনাপ করে। এমন অবস্থায় পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তি লঙ্ঘন করেছে এমন অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক সালিশে যায়। ২০১৯ সালে এর রায় দেয় বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটলেমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউটস (আইসিএসআইডি)। তারা টিসিসির পক্ষে রায় দেয়। ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাদেরকে ৬০০ কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে তারা। এই বিপুল পরিমাণ অর্থদণ্ড এড়াতে পাকিস্তান ব্যারিক গোল্ডের সঙ্গে একটি সমঝোতা চালিয়ে যেতে থাকে। অবশেষে ২০২২ সালে একটি চুক্তিতে উপনীত হয়।