Dhaka 6:04 pm, Friday, 23 May 2025

ইফতার-সেহরিতে যা খাবেন, যা খাবেন না

সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে অবশ্যই সতর্কতার সহিত খাবার মেনু বাছাই করতে হবে। আবার রোজা রাখতে সেহরিতে যা খেলে শরীর যাতে ক্লান্ত না হয়ে পড়ে এমন খাবার খেতে হবে। তাই আসুন জেনে নেওয়া যাক, ইফতার-সেহরিতে যা খাবেন, যা খাবেন না।

ইফতারে যা খাবেন:ইফতার শুরু করতে খেজুর বা খোরমা দিয়ে। সবজি ও ফল খেতে হবে। ইফতারে আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ জাতীয় খাবার খেতে হবে। ইফতারের পর থেকে সেহরির আগ পর্যন্ত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা জরুরি। কেননা সারাদিন না খেয়ে থাকার কারণে শরীরে পানির অভাব দেখা দিতে পারে। হজমের সমস্যা হতে পারে। তাই ইফতারের পর পরিমাণমত পানি পান করতে হবে। এছাড়া আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে লাল আটা, বাদাম, বিনস, ছোলা, ডাল ইত্যাদি খেতে হবে। কলা খেতে পারেন। কেননা প্রতিটি কলায় প্রায় ১০৫ ক্যালরি থাকে। রোজার শেষে শরীর, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুকোষ খাবারের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক শক্তির জোগানে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে কলা।

ইফতারে যা খবেন না:অতিরিক্ত তেল ও মসলাযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভাল। তবে খেতে হলে অল্প পরিমাণ খেতে হবে। সম্ভব হলে তালিকা থেকে ছোলা ভুনা, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, হালিম, বিরিয়ানি ইত্যাদি বাদ দিতে হবে। পাশাপাশি বাদ দিতে হবে চিনিযুক্ত খাবার। দুর্বলতা কাটাতে ডাবের পানি বা স্যালাইন খাওয়া যেতে পারে।

আরো পড়ুন:রোজায় পুষ্টি এবং শক্তি পাবেন যেসব খাবারে

সেহরিতে যা খাবেন : সেহরি থেকে ইফতারের মাধ্যমে রোজা ভাঙার আগ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকতে হয়। তাই সেহরি হতে হবে পরিকল্পিত ও স্বাস্থ্যকর। কেননা সারা দিন রোজা রাখার শক্তি যেন পাওয়া যায় এমন খাবার বেছে নিতে হবে। সেহরির খাবার এমন হতে হবে যেন তা সারা দিনের দেহের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারে। আবার অতিরিক্ত খাওয়াও উচিত নয়। ভাত–রুটি, ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাত, লাল আটার রুটি, আলু, চিড়া, ওটস, সিরিয়াল, বার্লি– এই খাবারগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট থাকে। তাই সেহরির খাদ্য তালিকার একটা বড় অংশজুড়ে এসব খাবার রাখলে তা আপনাকে রোজার সময়ও সারা দিন সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখবে। এছাড়া সেহরিতে আমিষ বা প্রোটিন জাতীয় খাবার থাকলে তা দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সারাদিন শক্তি জোগাবে। মাছ, মাংস, তরল দুধ, গুঁড়া দুধ, দুধজাত খাবার, ডিম, ডাল প্রভৃতি খাবার প্রোটিনের ভালো উৎস। এ ছাড়া এসব খাবারে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, জিংক, আয়রন প্রভৃতি পুষ্টি উপাদানও প্রচুর পরিমাণে থাকে, যা হাড়ের সুস্থতার জন্য জরুরি। সেহরিতে দুধ একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার হতে পারে। লো ফ্যাট দুধ রক্তের কোলেস্টেরল বজায় রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া দুধজাতীয় বিভিন্ন খাবার যেমন ঘরে দই মেকার দিয়ে বানানো দই, ছানা প্রভৃতি কিংবা কলা ও আমসহ দুধভাত শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাবে। মাছ বা মাংসের বদলে সেহরির খাবারে ডিম থাকলেও তা প্রয়োজনীয় শক্তির চাহিদা পূরণ করতে পারে। পাশাপাশি ভিটামিন শরীরের জন্য খুবই দরকারি একটি পুষ্টি উপাদান। তাজা শাকসবজি দেহের প্রয়োজনীয় ভিটামিনের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস। তাই সেহরিতে প্রতিদিন সবজি খাওয়া উচিত। তবে রাতের খাবারে অতিরিক্ত আঁশযুক্ত সবজি খাওয়া ঠিক না। কারণ অতিরিক্ত ফাইবার সমৃদ্ধ সবজি হজমের ঝামেলা করতে পারে। তার বদলে সেহরিতে মাঝারি আঁশের সবজি যেমন ঝিঙে, চিচিংগা, লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, গাজর প্রভৃতি খাওয়াটা বেশি স্বাস্থ্যসম্মত।

আরো পড়ুন:রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে করণীয়

সেহরিতে যেসব খাবার খাওয়া যাবে না : সেহরির সময় বেশি তৈলাক্ত, মসলাদার এবং ঝাল খাবার খাওয়া উচিত না। সে ক্ষেত্রে সেহরির খাদ্য তালিকা থেকে বিরিয়ানি, পোলাও, তেহারি প্রভৃতি ভারি ধরনের খাবার বাদ দিতে পারেন। সেহরিতে এসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। পানিশূন্যতা বাড়ায় বলে সেহরির সময় অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়। দেহে পানিশূন্যতা যাতে না হয়, সেদিকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে।

2 thoughts on “ইফতার-সেহরিতে যা খাবেন, যা খাবেন না

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

ইফতার-সেহরিতে যা খাবেন, যা খাবেন না

Update Time : 12:09:32 pm, Monday, 18 March 2024

সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে অবশ্যই সতর্কতার সহিত খাবার মেনু বাছাই করতে হবে। আবার রোজা রাখতে সেহরিতে যা খেলে শরীর যাতে ক্লান্ত না হয়ে পড়ে এমন খাবার খেতে হবে। তাই আসুন জেনে নেওয়া যাক, ইফতার-সেহরিতে যা খাবেন, যা খাবেন না।

ইফতারে যা খাবেন:ইফতার শুরু করতে খেজুর বা খোরমা দিয়ে। সবজি ও ফল খেতে হবে। ইফতারে আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ জাতীয় খাবার খেতে হবে। ইফতারের পর থেকে সেহরির আগ পর্যন্ত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা জরুরি। কেননা সারাদিন না খেয়ে থাকার কারণে শরীরে পানির অভাব দেখা দিতে পারে। হজমের সমস্যা হতে পারে। তাই ইফতারের পর পরিমাণমত পানি পান করতে হবে। এছাড়া আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে লাল আটা, বাদাম, বিনস, ছোলা, ডাল ইত্যাদি খেতে হবে। কলা খেতে পারেন। কেননা প্রতিটি কলায় প্রায় ১০৫ ক্যালরি থাকে। রোজার শেষে শরীর, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুকোষ খাবারের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক শক্তির জোগানে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে কলা।

ইফতারে যা খবেন না:অতিরিক্ত তেল ও মসলাযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভাল। তবে খেতে হলে অল্প পরিমাণ খেতে হবে। সম্ভব হলে তালিকা থেকে ছোলা ভুনা, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, হালিম, বিরিয়ানি ইত্যাদি বাদ দিতে হবে। পাশাপাশি বাদ দিতে হবে চিনিযুক্ত খাবার। দুর্বলতা কাটাতে ডাবের পানি বা স্যালাইন খাওয়া যেতে পারে।

আরো পড়ুন:রোজায় পুষ্টি এবং শক্তি পাবেন যেসব খাবারে

সেহরিতে যা খাবেন : সেহরি থেকে ইফতারের মাধ্যমে রোজা ভাঙার আগ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকতে হয়। তাই সেহরি হতে হবে পরিকল্পিত ও স্বাস্থ্যকর। কেননা সারা দিন রোজা রাখার শক্তি যেন পাওয়া যায় এমন খাবার বেছে নিতে হবে। সেহরির খাবার এমন হতে হবে যেন তা সারা দিনের দেহের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারে। আবার অতিরিক্ত খাওয়াও উচিত নয়। ভাত–রুটি, ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাত, লাল আটার রুটি, আলু, চিড়া, ওটস, সিরিয়াল, বার্লি– এই খাবারগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট থাকে। তাই সেহরির খাদ্য তালিকার একটা বড় অংশজুড়ে এসব খাবার রাখলে তা আপনাকে রোজার সময়ও সারা দিন সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখবে। এছাড়া সেহরিতে আমিষ বা প্রোটিন জাতীয় খাবার থাকলে তা দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সারাদিন শক্তি জোগাবে। মাছ, মাংস, তরল দুধ, গুঁড়া দুধ, দুধজাত খাবার, ডিম, ডাল প্রভৃতি খাবার প্রোটিনের ভালো উৎস। এ ছাড়া এসব খাবারে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, জিংক, আয়রন প্রভৃতি পুষ্টি উপাদানও প্রচুর পরিমাণে থাকে, যা হাড়ের সুস্থতার জন্য জরুরি। সেহরিতে দুধ একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার হতে পারে। লো ফ্যাট দুধ রক্তের কোলেস্টেরল বজায় রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া দুধজাতীয় বিভিন্ন খাবার যেমন ঘরে দই মেকার দিয়ে বানানো দই, ছানা প্রভৃতি কিংবা কলা ও আমসহ দুধভাত শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাবে। মাছ বা মাংসের বদলে সেহরির খাবারে ডিম থাকলেও তা প্রয়োজনীয় শক্তির চাহিদা পূরণ করতে পারে। পাশাপাশি ভিটামিন শরীরের জন্য খুবই দরকারি একটি পুষ্টি উপাদান। তাজা শাকসবজি দেহের প্রয়োজনীয় ভিটামিনের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস। তাই সেহরিতে প্রতিদিন সবজি খাওয়া উচিত। তবে রাতের খাবারে অতিরিক্ত আঁশযুক্ত সবজি খাওয়া ঠিক না। কারণ অতিরিক্ত ফাইবার সমৃদ্ধ সবজি হজমের ঝামেলা করতে পারে। তার বদলে সেহরিতে মাঝারি আঁশের সবজি যেমন ঝিঙে, চিচিংগা, লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, গাজর প্রভৃতি খাওয়াটা বেশি স্বাস্থ্যসম্মত।

আরো পড়ুন:রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে করণীয়

সেহরিতে যেসব খাবার খাওয়া যাবে না : সেহরির সময় বেশি তৈলাক্ত, মসলাদার এবং ঝাল খাবার খাওয়া উচিত না। সে ক্ষেত্রে সেহরির খাদ্য তালিকা থেকে বিরিয়ানি, পোলাও, তেহারি প্রভৃতি ভারি ধরনের খাবার বাদ দিতে পারেন। সেহরিতে এসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। পানিশূন্যতা বাড়ায় বলে সেহরির সময় অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়। দেহে পানিশূন্যতা যাতে না হয়, সেদিকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে।