
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শত বছরের পুরনো কেশা পাগলার মাসব্যাপী মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত জৌলুস হারাচ্ছে এই মেলার। কালের বিবর্তনে এমনটা হচ্ছে বলে ধারণা করেন মেলাটির পৃষ্ঠপোষক এবং এলাকাবাসী। কালিয়াকৈর উপজেলার ঢালজোড়া ইউনিয়নের দেওয়াইর গ্রামে ঐতিহ্যবাহী চিনাইল পাগলের আশ্রমে পৌষ সংক্রান্তি প্রথম দিন থেকেই শুরু হয় এই মেলা । লোকমুখে কেশা পাগলার মেলা নামে পরিচিত। এক মাস ব্যাপী চলে মেলা । মেলার ভিতরে বিভিন্ন ধরনের উৎসব উদযাপন হয়। যুগ যুগ ধরে চলে আসা রেওয়াজ অনুসারে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও চিনাইল পাগলের আশ্রমে দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে এসেছেন কেশা পাগলার শত শত ভক্তবৃন্দরা । মাসব্যাপী এরা কেশা পাগলার আশ্রমেই অবস্থান করে মেলা শেষে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যায়। মেলা উপলক্ষে ঐ গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যেও শুরু হয় মাসব্যাপী উৎসব । চারপাশে বসে বাঁশ, কাঠ,বেতের, এবং মাটির তৈরি বিভিন্ন খেলনা সামগ্রী, গৃহস্থালি সামগ্রী, আসবাবপত্র ও দেব-দেবীর মূর্তির পসরা সাজিয়ে বসেছে শত শত দোকানদার। রয়েছে বিভিন্ন বাতাসার দোকান । এত কিছুর পরেও অতীতের সেই জৌলুস নেই মেলায় ভিতরে। একসময় মেলা উপলক্ষে ঐ গ্রামে শুরু হতো আনন্দের মহোৎসব । গ্রামের বিবাহিত মেয়েরা মেলা উপলক্ষে স্বামী সন্তানসহ বাপের বাড়ি থেকে বেড়াতে আসতো । দেশ-বিদেশ থেকে ভক্তরা ঢাকঢোল বাজিয়ে দলে দলে মেলায় আসতো । বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মানুষ রোগ মুক্তির জন্য মানত করতেন কেশা পাগলার আশ্রমে ।
কিন্তু যুগের পরিবর্তনে বদলে গেছে সেই চিত্র । আগের মতো সেই উৎসব এখন আর চোখে পরে না । তবে পুরনো এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে এখনো গ্রামবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মেলাটি উদযাপনে অংশগ্রহণ করেন । মেলায় মানত নিয়ে আসা পুতুল কর্মকার জানায়, পূর্ব পুরুষের কাছে শুনেছি এই মেলায় মানত করলে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই আমি এসেছি।