Dhaka 3:36 am, Sunday, 1 June 2025

জলঢাকায় ভূয়া অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এমপিও স্থগিত

গোলনা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা

 নীলফামারীর জলঢাকার গোলনা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভূয়া অধ্যক্ষ হোসাইন আহমেদ এর বিরুদ্ধে নীতিমালা লঙ্ঘন করে এমপিও সিটে ৬নং সিরিয়ালে তার নাম থাকার পরও, তিনি স্থানীয় প্রভাব দেখিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য ও সিনিয়র শিক্ষকের নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে দাবিয়ে রাখা এবং সুযোগ বুঝে জাল কাগজপত্র সৃষ্টি করে, নিয়োগ কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে গত অগাস্ট/২৪ইং ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে এমপিও ভুক্ত হয়েছিল।
জানা যায়, গত অগাস্ট/২৪ইং মাসে জুনিয়র শিক্ষক হোসাইন আহমাদ অধ্যক্ষ হিসেবে এমপিওভুক্ত হলে, সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, তার নিয়োগের বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়ে গত ১৮-০৯-২৪ইং তারিখে তার ওই ভূয়া নিয়োগের এমপিও বাতিলসহ ও প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। মাদ্রাসা অধিদপ্তর থেকে দীর্ঘ ৭মাস তদন্ত শেষে অধ্যক্ষ পদে বিধিবর্হিভূতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা -২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০পর্যন্ত সংশোধিত) এর ১৮.১(গ)(ঙ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হোসাইন আহমাদ (ইনডেক্স -R2018380)(ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ)এর মাসিক বেতন ভাতা (এমপিও) সাময়িক স্থগিত করেন। আগস্ট/২০২৪ হতে অক্টোবর/২০২৪ পর্যন্ত অধ্যক্ষ পদের বিপরীতে উত্তোলিত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দানের নির্দেশ প্রদান করেন। একই ধারাবাহিকতায় গত ২০১৫ সালে নিয়োগ দেখিয়ে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নির্বাচনী ভূয়া মনোনয়ন পত্র তৈরি করে আবারও ৫জন শিক্ষককে এমপিও ভুক্ত করায় অভিযোগ উঠেছে হোসেন আহমাদ এর বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে গত ০৯-১২-২৪ইং তারিখ মাহবুবুর রহমানসহ গভর্নিং বডির ৫জন সদস্য মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ১২ মার্চ/ইং এবিষয়ে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দেয়ার জন্য জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি পত্র দেন।
অভিযোগকারী শিক্ষক মাহবুবুর রহমান জানান, ৫জন ভূয়া নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষককের এমপিও ভুক্তি বাতিল সংক্রান্ত তদন্তের বিষয়ে গত ২৬মে/২৫ইং সোমবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছিল। তিনি আরও জানান, আমি অসুস্থ থাকার কারণে সেখানে উপস্থিত হতে পারিনি। তবে, অভিভাবক সদস্য মোজাফফর হোসেন এর মাধ্যমে আমিসহ ৪জন লিখিত জবাব জমা দিয়েছি। তিনি আরো জানান, ২০১৬ সালে হোসাইন আহমাদ অবৈধ ভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে, শুধু তার কারনেই মাদ্রাসার সকল শিক্ষক/কর্মচারীগণের ১৪মাসের মাসিক বিল ও বোনাসের প্রায় ৭০/৭৫ লাখ টাকা এখন পর্যন্ত তুলতে পারি নাই। তিনি একক ভাবে কারো সাথে কোন পরামর্শ না করে একাই নিজের বাবার পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে মাদ্রাসার বেশির ভাগ জমি বন্ধক দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন । এমনকি মাদ্রাসার ৫০-৬০ বিঘা জমির ফসল বিক্রির টাকা এবং সেই সময় থেকে অদ্যাবধি শিক্ষকদের টিউশন ফি, সেশন ফি, ১শত ৯৪ ফিট লম্বা চৌ-চালা বারান্দা সহ ৮ কক্ষ বিশিষ্ট একটি অদা-পাকা ঘর বিক্রির টাকা, পুকুর ইজারার টাকা, মাদ্রাসার জমির উপর ১৫টি দোকান ঘর বরাদ্দের জামায়াতের টাকা ও দোকানের মাসিক ভাড়ার টাকা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ না করে, তিনি সম্পূর্ণ আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মাহবুবুর রহমান ওই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নীলফামারী মহোদয়ের নিকট শিক্ষার মান উন্নয়নের স্বার্থে, নিয়োগ জালিয়াতিসহ আর্থিক সকল বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ভূয়া অধ্যক্ষ হোসাইন আহমাদ এর
বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
তৎকালীন সময়ের সাবেক সভাপতি হামিদুল হক জানান, আমি কোন অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেইনি এবং ওই ৫জন শিক্ষককে কিভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে আমি কিছুই জানিনা। কেহ যদি আমার স্বাক্ষর জাল করে থাকেন ,আমি তার বিরুদ্ধে কি করতে পারি। (তাঁর অডিও কথোপকথন সংরক্ষণ আছে)
মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্তের নির্দেশনার চিঠির অবমূল্যায়ন করে, সরেজমিনে ওই প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না হয়ে এবং একই দিনে অভিযোগকারী মাহবুবুর রহমানসহ ৪জন ও অভিযুক্ত শিক্ষকদেরকে আপনার অফিসে উপস্থিত থাকার জন্য ডাকা সঠিক হয়েছে কি-না জানতে চাইলে, অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফু-উদ-জ্জামান সরকার বলেন বিষয়টি এখনো প্রতিবেন তৈরি করি নাই।
আগে প্রতিবেদন তৈরি করি!

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট সংবাদ

এবার নৌপথে ঘরে ফেরা মানুষের কোনো সমস্যা হবে না

বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

জলঢাকায় ভূয়া অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এমপিও স্থগিত

Update Time : 09:03:39 pm, Friday, 30 May 2025
 নীলফামারীর জলঢাকার গোলনা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভূয়া অধ্যক্ষ হোসাইন আহমেদ এর বিরুদ্ধে নীতিমালা লঙ্ঘন করে এমপিও সিটে ৬নং সিরিয়ালে তার নাম থাকার পরও, তিনি স্থানীয় প্রভাব দেখিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য ও সিনিয়র শিক্ষকের নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে দাবিয়ে রাখা এবং সুযোগ বুঝে জাল কাগজপত্র সৃষ্টি করে, নিয়োগ কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে গত অগাস্ট/২৪ইং ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে এমপিও ভুক্ত হয়েছিল।
জানা যায়, গত অগাস্ট/২৪ইং মাসে জুনিয়র শিক্ষক হোসাইন আহমাদ অধ্যক্ষ হিসেবে এমপিওভুক্ত হলে, সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, তার নিয়োগের বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়ে গত ১৮-০৯-২৪ইং তারিখে তার ওই ভূয়া নিয়োগের এমপিও বাতিলসহ ও প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। মাদ্রাসা অধিদপ্তর থেকে দীর্ঘ ৭মাস তদন্ত শেষে অধ্যক্ষ পদে বিধিবর্হিভূতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা -২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০পর্যন্ত সংশোধিত) এর ১৮.১(গ)(ঙ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হোসাইন আহমাদ (ইনডেক্স -R2018380)(ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ)এর মাসিক বেতন ভাতা (এমপিও) সাময়িক স্থগিত করেন। আগস্ট/২০২৪ হতে অক্টোবর/২০২৪ পর্যন্ত অধ্যক্ষ পদের বিপরীতে উত্তোলিত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দানের নির্দেশ প্রদান করেন। একই ধারাবাহিকতায় গত ২০১৫ সালে নিয়োগ দেখিয়ে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নির্বাচনী ভূয়া মনোনয়ন পত্র তৈরি করে আবারও ৫জন শিক্ষককে এমপিও ভুক্ত করায় অভিযোগ উঠেছে হোসেন আহমাদ এর বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে গত ০৯-১২-২৪ইং তারিখ মাহবুবুর রহমানসহ গভর্নিং বডির ৫জন সদস্য মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ১২ মার্চ/ইং এবিষয়ে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দেয়ার জন্য জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি পত্র দেন।
অভিযোগকারী শিক্ষক মাহবুবুর রহমান জানান, ৫জন ভূয়া নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষককের এমপিও ভুক্তি বাতিল সংক্রান্ত তদন্তের বিষয়ে গত ২৬মে/২৫ইং সোমবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছিল। তিনি আরও জানান, আমি অসুস্থ থাকার কারণে সেখানে উপস্থিত হতে পারিনি। তবে, অভিভাবক সদস্য মোজাফফর হোসেন এর মাধ্যমে আমিসহ ৪জন লিখিত জবাব জমা দিয়েছি। তিনি আরো জানান, ২০১৬ সালে হোসাইন আহমাদ অবৈধ ভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে, শুধু তার কারনেই মাদ্রাসার সকল শিক্ষক/কর্মচারীগণের ১৪মাসের মাসিক বিল ও বোনাসের প্রায় ৭০/৭৫ লাখ টাকা এখন পর্যন্ত তুলতে পারি নাই। তিনি একক ভাবে কারো সাথে কোন পরামর্শ না করে একাই নিজের বাবার পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে মাদ্রাসার বেশির ভাগ জমি বন্ধক দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন । এমনকি মাদ্রাসার ৫০-৬০ বিঘা জমির ফসল বিক্রির টাকা এবং সেই সময় থেকে অদ্যাবধি শিক্ষকদের টিউশন ফি, সেশন ফি, ১শত ৯৪ ফিট লম্বা চৌ-চালা বারান্দা সহ ৮ কক্ষ বিশিষ্ট একটি অদা-পাকা ঘর বিক্রির টাকা, পুকুর ইজারার টাকা, মাদ্রাসার জমির উপর ১৫টি দোকান ঘর বরাদ্দের জামায়াতের টাকা ও দোকানের মাসিক ভাড়ার টাকা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ না করে, তিনি সম্পূর্ণ আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মাহবুবুর রহমান ওই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নীলফামারী মহোদয়ের নিকট শিক্ষার মান উন্নয়নের স্বার্থে, নিয়োগ জালিয়াতিসহ আর্থিক সকল বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ভূয়া অধ্যক্ষ হোসাইন আহমাদ এর
বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
তৎকালীন সময়ের সাবেক সভাপতি হামিদুল হক জানান, আমি কোন অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেইনি এবং ওই ৫জন শিক্ষককে কিভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে আমি কিছুই জানিনা। কেহ যদি আমার স্বাক্ষর জাল করে থাকেন ,আমি তার বিরুদ্ধে কি করতে পারি। (তাঁর অডিও কথোপকথন সংরক্ষণ আছে)
মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্তের নির্দেশনার চিঠির অবমূল্যায়ন করে, সরেজমিনে ওই প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না হয়ে এবং একই দিনে অভিযোগকারী মাহবুবুর রহমানসহ ৪জন ও অভিযুক্ত শিক্ষকদেরকে আপনার অফিসে উপস্থিত থাকার জন্য ডাকা সঠিক হয়েছে কি-না জানতে চাইলে, অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফু-উদ-জ্জামান সরকার বলেন বিষয়টি এখনো প্রতিবেন তৈরি করি নাই।
আগে প্রতিবেদন তৈরি করি!