Dhaka 4:30 pm, Saturday, 15 March 2025
নেই প্রশাসনের নজরদারি, ভোগান্তিতে যাত্রীরা।

নামে মাত্র যাত্রী ছাউনি, দখলে হকাররা, সুবিধা ভোগ করছে রক্ষনশীল ব্যক্তিরা

Exif_JPEG_420

কুমিল্লার মহাসড়কের অন্তত ৫০টি স্থানে যাত্রী ছাউনি নির্মাণ হয়েছে যাত্রী বসা কিংবা বিশ্রামের প্রয়োজনে। এ যাত্রী ছাউনিগুলো রক্ষণাবেক্ষণের শর্তে চুক্তিভিত্তিক ছাউনির পাশে ছোট দোকান বসানোর অনুমতি দেয় জেলা পরিষদ। চুক্তিতে শর্ত ছিলো দোকান পরিচালনা কারিরাই ছাউনিকে যাত্রীদের বসার উপযুক্ত রাখার পাশাপাশি দখলের হাত থেকে রক্ষা করবেন। কিন্তুযাত্রী সেবা নিশ্চিত করা তো দূরের কথা অনেক স্থানে পুরো ছাউনি দখলে নিয়েছেন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। বিগত সরকার আমলে রাজনৈতিক এবং পেশিশক্তি ব্যবহার করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কুমিল্লা-নোয়াখালী, চাঁদপুর ও কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কসহ জেলার যাত্রীছাউনিগুলো দখলে নিয়েছেন। বর্তমানে জেলা পরিষদের কাগজেকলমে উল্লেখ থাকলেও বহু ছাউনির ছিটেফোটাও নেই সড়কে। এর আগে বহুবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে বারবার সংবাদ প্রকাশের পরও প্রশাসনের তেমন কোন ভূমিকা চোখে পড়েনি।
জেলা পরিষদ বলছে, কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে বহুবার যাত্রীছাউনিগুলো দখলেকৃত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের উচ্ছদের চেষ্টা করা হলেও রাজনৈতিক বাধার মুখে তা আর সম্ভব হয়নি।
কুমিল্লা জেলা পরিষদের তথ্য বলছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কুমিল্লা নোয়াখালী, চাঁদপুর ও কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক ছাড়াও সড়ক বিভাগের বিভিন্ন সড়কে অন্তত অর্ধশতাধিক যাত্রীছাউনি রয়েছে। এছাড়াও সড়ক বিভাগের রয়েছে আরও ডজনখানেক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড় এলাকায় ছাউনির ভেতরে বসানো হয়েছে ফল, পানসুপারি এবং খাওয়ার হোটেলের ব্যবসা। বাহিরের অংশ ভাসমান ব্যবসায়ীদের দখলে। ছাউনির পুরো জায়গাটিই দখলদাদের ব্যবসায়। অথচ শর্ত ছিলো যাত্রীদের বসার উপযুক্ত রাখার পাশাপাশি দখলের হাত থেকে রক্ষা করবেন।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে দখলে রাখা ব্যবসায়ীরা বলেন, দীর্ঘদিন যাবত তারা এভাবেই ছাউনি দখলে নিয়ে ব্যবসা করছেন। আগে ফুটপাতে ব্যবসা করলেও রোদ, বৃষ্টির কারণে বিগত সরকারের আমলে স্থানীয় নেতাদের সহযোহিতায় যাতত্রী ছাউনির ভেতরে ব্যবসা শুরু করেন। জেলা পরিষদ বা সড়ক বিভাগ থেকে কোন অনুমতির প্রয়োজন হয়নি।
অন্যদিকে প্রায় একই দশা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনার মাধাইয়ার যাত্রীছাউনিরও। রক্ষণাবেক্ষনের পাশাপাশি দখলমুক্ত রাখার চুক্তিতে ছাউনির দুপাশে দুইটি দোকনের অনুমতি নেয় স্থানীয় দুই সহোদর প্রবাসী কামাল ও খালেক। প্রতি মাসে ভাড়া আদায়ের পাশাপাশি নিচ্ছেন বিশ্রাম এবং শৌচাগার ফি। দখল ও আবর্জনায় ছাউনি হারিয়েছে বসার পরিবেশ।
মা স্টোরের আবদুল মান্নান এবং ভাই ভাই স্টোরের মোহাম্মদ জালাল নামে দুই ব্যবসায়ী বলেন, ছাউনির ভেতরে কামাল ও খালেকের কনফেকশনারী দোকানগুলো তারা ভাড়া নিয়ে পরিচালনা করছেন। বর্তমানে তারা প্রবাসে রয়েছেন। প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা ভাড়া দিচ্ছেন।
ঠিক একই অবস্থা কুমিল্লার সড়ক, মহাসড়কের অন্য যাত্রী ছাউনিগুলোরও। যার বেশিরভাগই এখন বেদখলে।
এ প্রসঙ্গে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সাবেক সভাপতি রোকেয়া বেগম বলেন, ছাউনি হলো যাত্রীর অধিকার। সেখানে ব্যবসা হলে সাধারণ মানুষ বসবে কোথায়? বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য কষ্টের। একই সাথে গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক প্লেসে ব্রেস্ট ফিডিং রুম রাখতে হবে।
খুব দ্রুতই দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজমুল ইসলাম বলেন, যাত্রীছাউনি যাত্রী জন্য নিশ্চিত করা হবে। একি সঙ্গে যাত্রী সেবায় নির্মিত ছাউনি দখলে নেয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যেসকল ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন, সেটাই নিবে জেলা পরিষদ

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

নেই প্রশাসনের নজরদারি, ভোগান্তিতে যাত্রীরা।

নামে মাত্র যাত্রী ছাউনি, দখলে হকাররা, সুবিধা ভোগ করছে রক্ষনশীল ব্যক্তিরা

Update Time : 07:26:13 pm, Tuesday, 7 January 2025
কুমিল্লার মহাসড়কের অন্তত ৫০টি স্থানে যাত্রী ছাউনি নির্মাণ হয়েছে যাত্রী বসা কিংবা বিশ্রামের প্রয়োজনে। এ যাত্রী ছাউনিগুলো রক্ষণাবেক্ষণের শর্তে চুক্তিভিত্তিক ছাউনির পাশে ছোট দোকান বসানোর অনুমতি দেয় জেলা পরিষদ। চুক্তিতে শর্ত ছিলো দোকান পরিচালনা কারিরাই ছাউনিকে যাত্রীদের বসার উপযুক্ত রাখার পাশাপাশি দখলের হাত থেকে রক্ষা করবেন। কিন্তুযাত্রী সেবা নিশ্চিত করা তো দূরের কথা অনেক স্থানে পুরো ছাউনি দখলে নিয়েছেন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। বিগত সরকার আমলে রাজনৈতিক এবং পেশিশক্তি ব্যবহার করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কুমিল্লা-নোয়াখালী, চাঁদপুর ও কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কসহ জেলার যাত্রীছাউনিগুলো দখলে নিয়েছেন। বর্তমানে জেলা পরিষদের কাগজেকলমে উল্লেখ থাকলেও বহু ছাউনির ছিটেফোটাও নেই সড়কে। এর আগে বহুবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে বারবার সংবাদ প্রকাশের পরও প্রশাসনের তেমন কোন ভূমিকা চোখে পড়েনি।
জেলা পরিষদ বলছে, কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে বহুবার যাত্রীছাউনিগুলো দখলেকৃত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের উচ্ছদের চেষ্টা করা হলেও রাজনৈতিক বাধার মুখে তা আর সম্ভব হয়নি।
কুমিল্লা জেলা পরিষদের তথ্য বলছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কুমিল্লা নোয়াখালী, চাঁদপুর ও কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক ছাড়াও সড়ক বিভাগের বিভিন্ন সড়কে অন্তত অর্ধশতাধিক যাত্রীছাউনি রয়েছে। এছাড়াও সড়ক বিভাগের রয়েছে আরও ডজনখানেক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড় এলাকায় ছাউনির ভেতরে বসানো হয়েছে ফল, পানসুপারি এবং খাওয়ার হোটেলের ব্যবসা। বাহিরের অংশ ভাসমান ব্যবসায়ীদের দখলে। ছাউনির পুরো জায়গাটিই দখলদাদের ব্যবসায়। অথচ শর্ত ছিলো যাত্রীদের বসার উপযুক্ত রাখার পাশাপাশি দখলের হাত থেকে রক্ষা করবেন।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে দখলে রাখা ব্যবসায়ীরা বলেন, দীর্ঘদিন যাবত তারা এভাবেই ছাউনি দখলে নিয়ে ব্যবসা করছেন। আগে ফুটপাতে ব্যবসা করলেও রোদ, বৃষ্টির কারণে বিগত সরকারের আমলে স্থানীয় নেতাদের সহযোহিতায় যাতত্রী ছাউনির ভেতরে ব্যবসা শুরু করেন। জেলা পরিষদ বা সড়ক বিভাগ থেকে কোন অনুমতির প্রয়োজন হয়নি।
অন্যদিকে প্রায় একই দশা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনার মাধাইয়ার যাত্রীছাউনিরও। রক্ষণাবেক্ষনের পাশাপাশি দখলমুক্ত রাখার চুক্তিতে ছাউনির দুপাশে দুইটি দোকনের অনুমতি নেয় স্থানীয় দুই সহোদর প্রবাসী কামাল ও খালেক। প্রতি মাসে ভাড়া আদায়ের পাশাপাশি নিচ্ছেন বিশ্রাম এবং শৌচাগার ফি। দখল ও আবর্জনায় ছাউনি হারিয়েছে বসার পরিবেশ।
মা স্টোরের আবদুল মান্নান এবং ভাই ভাই স্টোরের মোহাম্মদ জালাল নামে দুই ব্যবসায়ী বলেন, ছাউনির ভেতরে কামাল ও খালেকের কনফেকশনারী দোকানগুলো তারা ভাড়া নিয়ে পরিচালনা করছেন। বর্তমানে তারা প্রবাসে রয়েছেন। প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা ভাড়া দিচ্ছেন।
ঠিক একই অবস্থা কুমিল্লার সড়ক, মহাসড়কের অন্য যাত্রী ছাউনিগুলোরও। যার বেশিরভাগই এখন বেদখলে।
এ প্রসঙ্গে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সাবেক সভাপতি রোকেয়া বেগম বলেন, ছাউনি হলো যাত্রীর অধিকার। সেখানে ব্যবসা হলে সাধারণ মানুষ বসবে কোথায়? বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য কষ্টের। একই সাথে গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক প্লেসে ব্রেস্ট ফিডিং রুম রাখতে হবে।
খুব দ্রুতই দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজমুল ইসলাম বলেন, যাত্রীছাউনি যাত্রী জন্য নিশ্চিত করা হবে। একি সঙ্গে যাত্রী সেবায় নির্মিত ছাউনি দখলে নেয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যেসকল ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন, সেটাই নিবে জেলা পরিষদ