
আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে চুল আঁচড়ানোর মতো করে মাথায় একটি ব্রাশ বোলাতে বোলাতে কাঁদতে শুরু করল শামা তুবাইলি।মাথায় হাত রেখে শামা সিএনএনকে বলল, ‘ব্রাশ দিয়ে আঁচড়ানোর জন্য আমার এক চিলতে চুলও অবশিষ্ট নেই। এ জন্য আমার মন ভীষণ খারাপ। আমি আয়না ধরে থাকি। কারণ, আমি আমার চুল আঁচড়াতে চাই। আমি সত্যিই আবার আমার চুল আঁচড়াতে চাই।’
মাথায় চিরুনি বোলালে আট বছরের এ শিশুর ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগের স্মৃতি মনে পড়ে যায়। সে পরিবারের সঙ্গে উত্তর গাজার জাবালিয়ায় থাকত। তখন তার মাথায় লম্বা চুল ছিল। বাড়ির বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে যেত। কিন্তু ৭ অক্টোবরের পর থেকে শামা ও তার পরিবার প্রায় ১৯ লাখ মানুষের কাতারে শামিল হয়েছেন, যাঁরা তাঁদের বাড়ি এক বা একাধিকবার ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।ডা. ইয়াসের আবু জামেই, গাজা কমিউনিটি মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রামের পরিচালক।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্দেশে শামার পরিবার প্রথমবারের মতো জাবালিয়া ছেড়ে দক্ষিণে রাফায় চলে যায়। সহিংসতা বাড়তে থাকলে তারা সেখান থেকে আবার তল্পিতল্পা গুঁটিয়ে মধ্য গাজার খান ইউনিসে একটি শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নেয়।
চুল পড়া নিয়ে অন্য শিশুদের কটাক্ষের শিকার হয়ে শামার মানসিক যন্ত্রণা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। ফলে সে ঘর থেকে বের হয় না বললেই চলে। বের হলেও মাথায় গোলাপি রঙের ব্যান্ডানা (রুমালবিশেষ) পড়ে থাকে।২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সিএনএন যখন শামার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে, তখন সে তার মা ওম-মোহাম্মদের কাছে অনুনয় করে বলে, ‘মা, আমি ক্লান্ত, মরে যেতে চাই। আমার চুল কেন গজাচ্ছে না?’ এরপর জিজ্ঞাসা করে, সে কি আজীবন টাক থাকবে? শামা আরও বলে, ‘আমি মরে যেতে চাই এবং চাই স্বর্গে গিয়ে আমার চুল গজাক।’