তাই সাহস করে ডাক দিলাম—এমদাদ ভাই, কোথায় যাচ্ছেন?

মনের আনন্দে।সংক্ষেপে জবাব দিলেন এমদাদ। বই পেয়ে পাঠাগার প্রাণ ফিরে পেলে আমার আনন্দ লাগে। তাই বই বিলিয়ে যাই।
২০১৮ সাল থেকে শুরু
এর আগে পরিচিতজনদের বই দিয়েছেন। তবে মোটাদাগে বই বিলানোর শুরুটা ২০১৮ সাল থেকে। সেবার তপনকান্তি ধর নামে এক ভদ্রলোকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল এমদাদুল হকের। এমদাদ বইপড়ুয়া জেনে তপন বলেছিলেন, গ্রামে আমরা একটি পাঠাগার করেছি, কিন্তু ভালো বইপত্র নেই।শুনে এমদাদ বললেন, আমার কাছে অনেক বই আছে। আপনাকে কিছু দেব। কিছুদিন পর মৌলভীবাজারের সেই চুনগড় পাঠাগারে ছয় শতাধিক বই নিয়ে হাজির এমদাদ।
অর্থের উৎস কী?
২০১৫ সালে অবসরে গেছেন এমদাদ। অবসরের সময় এককালীন কয়েক লাখ টাকা পেয়েছিলেন। তা ছাড়া তাঁর স্ত্রীও উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন মোটা অঙ্কের অর্থ। হাসিমুখে এমদাদ বললেন, আমি তো টাকা জমাই না, আনন্দ জমাই।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বেশ কয়েকবার সম্মাননা পেয়েছেন প্রচারবিমুখ এ মানুষটি। রাজশাহীর বোয়ালিয়ায় জননী গ্রন্থাগার ও সাংস্কৃতিক সংস্থা এবং গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরের সুলতানা রাজিয়া পাঠাগারে এমদাদের নামে কর্নার আছে। ২০২২ সালে টাঙ্গাইলে অনুষ্ঠিত পাঠাগার সম্মেলনে সম্মাননা জানানো হয়েছে তাঁকে। এর আগে পাবনার নাজিরপুরে জনকল্যাণ পাঠাগার থেকেও সম্মাননা পেয়েছেন।
একনজরে
কাজী এমদাদুল হক খোকন
জন্ম ১৯৫৬ সালে, ময়মনসিংহে। বাবার চাকরির সুবাদে শৈশব-কৈশোর কেটেছে ময়মনসিংহে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। বিএ পাস করেন শরীয়তপুরের ডামুড্যা কলেজ থেকে। ১৯৮০ সালে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন স্টেনোগ্রাফার হিসেবে। অবসরে যান ২০১৫ সালে। এখন থাকেন ঢাকার মিরপুরে। ব্যক্তিজীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক।