
ফরিদপুরে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী আসাদুজ্জামান বাচ্চু শেখকে (৪০) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানারও আদেশ দেয়া হয়।বুধবার (২৮ মে) দুপুর ১টায় ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামীমা পারভীন এই রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আসাদুজ্জামান ওরফে বাচ্চু শেখ উপস্থিত ছিলেন। তিনি রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার কানাই মাতুব্বর পাড়ার ছাত্তার শেখের ছেলে। আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর ফরিদপুর জেলা সদরের দ্বিরাজতুল্লাহ মাতুব্বরের ডাঙ্গী এলাকার এমবিএ নামক একটি মুরগির খামারের ঘর থেকে বাচ্চু শেখখের স্ত্রী শান্তার মরদেহ উদ্ধার করেন কোতয়ালী থানা পুলিশ। তারা দুজনেই ওই খামারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার পর স্বামী বাচ্চু শেখ ওই খামার থেকে পালিয়ে যান। এর দুদিন পর কোতয়ালী থানায় বাচ্চু শেখকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন নিহতের মা জরিনা বেগম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য শান্তাকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করে আসছিলেন স্বামী আসাদউজ্জামান বাচ্চু। এক পর্যায়ে শান্তাকে তালাকও দিয়ে দেন তিনি। কিছুদিন পর নিজের ভুল হয়েছে বলে ক্ষমা চেয়ে শান্তাকে পুনরায় বিয়ে করেন। এরপর তারা ওই মুরগির খামারে কাজ করা শুরু করেন। কিন্তু যৌতুকের জন্য পুনরায় বিভিন্ন সময় নির্যাতন চালাতে থাকেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর আসামি তাকে ফোন করে জানান তার মেয়ে খুব অসুস্থ।
এরপর রাতে আর ফোন রিসিভ না করলে পরেরদিন ওই এলাকায় এসে তালাবদ্ধ ঘরে তার মেয়ের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করেন। ঘটনার পর আসামি পালিয়ে গেলেও ২০২৩ সালের ২৫ মার্চ তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং একই বছরের ১৬ জুলাই আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক সুজন বিশ্বাস ও জাহাঙ্গীর আলম।রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম রব্বানী ভুইয়া রতন জানান, ১০ জনের সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। আমরা এই আদেশে সন্তুষ্ট প্রকাশ করছি।