খুব সকালেই ঘুম ভেঙে গেল। সত্যি বলতে সুন্দরবনে এলে ঘুম কখনো গভীর হয় না আমার। প্রতিটি ভোর এখানে যেন একেকটি নতুন অভিজ্ঞতা। জংরা ফরেস্ট স্টেশনের কাছেই একটি খালে অবস্থান করছিলাম আমরা।ভোরের মিষ্টি আলো, পাখির কিচিরমিচির আর নদীতে মাঝেমধ্যে ডলফিনের লাফ—সব মিলিয়ে এক স্বপ্নের আবহ।ভোরের আলোতে ট্রলার নিয়ে খালের মুখ ধরে এগোতে লাগলাম। একটু এগোতেই চোখে পড়ল বিশাল এক কুমির, মুহূর্তে পানিতে লাফিয়ে পড়ল।
ওপরে তাকিয়ে দেখি মরা এক গাছের ডালে বসে আছে একটি তিলা নাগ ইগল।চুপচাপ ও ধীর। ছবি তুলতে তুলতে আমরা এগোতে থাকি। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে থাকা বড় শিংওয়ালা এক চিত্রা হরিণ যেন আমাদের দিকে কৌতূহলী চোখে তাকিয়ে আছে। আমরা যেখানে যাচ্ছি, সেটি ঘন গাছপালায় ঘেরা পরিবেশ।এখানে একসঙ্গে ১০ থেকে ১২ প্রজাতির ম্যানগ্রোভ গাছ দেখা যায়। বনটি বেশ রহস্যময়। হঠাৎ একটি শব্দে চমকে উঠলাম—কিছু একটা উড়ে গিয়ে সামনে ঝোপের মধ্যে পড়ল। প্রথমে মনে হলো বনমোরগ। তবে সহকর্মী ওয়ালিদ বলল, ‘ভাই, এটা একটা বড় রাতচোরা পাখি ছিল!’ ঘন বনের ভেতর এমন কেমোফ্লেজ পাখি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।এরপর কিছুদূর এগিয়ে বড় বড় সুন্দরীগাছের নিচ দিয়ে হাঁটার সময় কানে এলো মৌটুসির ডাক।