Dhaka 8:23 pm, Tuesday, 25 March 2025

ইউরোপের কঠিন সন্ধিক্ষণে হঠাৎই অবস্থান স্পষ্ট করলো জার্মানি

ইউরোপের প্রতিরক্ষা নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চায় জার্মানি।

তুমি কি মনে করো পুতিনকে বিশ্বাস করা যায়?’ – ব্যঙ্গাত্মক হাসির সঙ্গে এমন প্রশ্ন রাখেন জার্মান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রালফ হ্যামারস্টাইন। এটি এমন একটি প্রশ্ন যার উত্তর ইউরোপের বেশিরভাগ দেশই একইভাবে দেবে। আর তা হলো ‘না’এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন যখন ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে একটি সমঝোতার চেষ্টা করছে—যা মস্কোর জন্য কিয়েভের তুলনায় বেশি লাভজনক হতে পারে—তখন ইউরোপীয় দেশগুলো, কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো, নিজেদের সামরিক শক্তির দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে।এর সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে জার্মানিতে। জার্মানির সশস্ত্র বাহিনী বুন্ডেসভের দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল, কিন্তু এবার সেই চিত্র পাল্টে যেতে চলেছে। প্রত্যাশিত নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এখনই সময় জার্মানির সামরিক খাতে স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করার।

জার্মান সরকার সম্প্রতি তাদের সংবিধানের ঋণসীমা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার পাশ করেছে। এর ফলে সামরিক খাতে বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের পথ উন্মুক্ত হয়েছে।একটি মডেল অনুসারে, যদি জার্মানি জিডিপির ৩.৫ শতাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করে, তাহলে ১০ বছরে মোট ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ৬০০ বিলিয়ন ইউরো বা ৬৫২ বিলিয়ন ডলার)।

সম্প্রতি জার্মানির কেন্দ্রীয় অঞ্চলের একটি গোপনীয় সামরিক ঘাঁটিতে সময় কাটিয়েছে, যেখানে পাঁচটি ন্যাটো মিত্রদেশ এক যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নেয়। মহড়ায় দেখানো হয়, কীভাবে একটি শত্রু রাষ্ট্র ন্যাটোর এক সদস্যের ওপর আক্রমণ চালায়।

সেখানে হ্যামারস্টাইন বলেন, ‘জার্মানি ইউরোপের একটি শক্তিশালী দেশ এবং অন্যান্য দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমরা ইউরোপের জন্য দায়িত্বশীল এবং বড় দেশ হিসেবে আমাদের ভূমিকা পালন করতেই হবে।’

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক আক্রমণ ইউরোপের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। বহু বছর ধরে যে শান্তি বজায় ছিল, তা শেষ হয়ে যায়।তিনি ১০০ বিলিয়ন ইউরোর একটি এককালীন বিশেষ তহবিল গঠন করেন, যা শুধুমাত্র বুন্ডেসভেরের আধুনিকীকরণের জন্য ব্যয় করা হবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে শলৎসকে সংবিধান সংশোধন করতে হয়, যা জার্মানিতে এক বিরল পদক্ষেপ।জার্মানি এখন ইউরোপের প্রতিরক্ষা নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চায় এবং সামরিক শক্তি বাড়াতে অপ্রতিরোধ্য পদক্ষেপ নিচ্ছে। পরিবর্তিত বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে, দেশটি ন্যাটোর শক্তিশালী মিত্রে পরিণত হওয়ার পথে এগোচ্ছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট সংবাদ
বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

ইউরোপের কঠিন সন্ধিক্ষণে হঠাৎই অবস্থান স্পষ্ট করলো জার্মানি

Update Time : 10:32:59 pm, Sunday, 23 March 2025

তুমি কি মনে করো পুতিনকে বিশ্বাস করা যায়?’ – ব্যঙ্গাত্মক হাসির সঙ্গে এমন প্রশ্ন রাখেন জার্মান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রালফ হ্যামারস্টাইন। এটি এমন একটি প্রশ্ন যার উত্তর ইউরোপের বেশিরভাগ দেশই একইভাবে দেবে। আর তা হলো ‘না’এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন যখন ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে একটি সমঝোতার চেষ্টা করছে—যা মস্কোর জন্য কিয়েভের তুলনায় বেশি লাভজনক হতে পারে—তখন ইউরোপীয় দেশগুলো, কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো, নিজেদের সামরিক শক্তির দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে।এর সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে জার্মানিতে। জার্মানির সশস্ত্র বাহিনী বুন্ডেসভের দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল, কিন্তু এবার সেই চিত্র পাল্টে যেতে চলেছে। প্রত্যাশিত নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এখনই সময় জার্মানির সামরিক খাতে স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করার।

জার্মান সরকার সম্প্রতি তাদের সংবিধানের ঋণসীমা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার পাশ করেছে। এর ফলে সামরিক খাতে বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের পথ উন্মুক্ত হয়েছে।একটি মডেল অনুসারে, যদি জার্মানি জিডিপির ৩.৫ শতাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করে, তাহলে ১০ বছরে মোট ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ৬০০ বিলিয়ন ইউরো বা ৬৫২ বিলিয়ন ডলার)।

সম্প্রতি জার্মানির কেন্দ্রীয় অঞ্চলের একটি গোপনীয় সামরিক ঘাঁটিতে সময় কাটিয়েছে, যেখানে পাঁচটি ন্যাটো মিত্রদেশ এক যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নেয়। মহড়ায় দেখানো হয়, কীভাবে একটি শত্রু রাষ্ট্র ন্যাটোর এক সদস্যের ওপর আক্রমণ চালায়।

সেখানে হ্যামারস্টাইন বলেন, ‘জার্মানি ইউরোপের একটি শক্তিশালী দেশ এবং অন্যান্য দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমরা ইউরোপের জন্য দায়িত্বশীল এবং বড় দেশ হিসেবে আমাদের ভূমিকা পালন করতেই হবে।’

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক আক্রমণ ইউরোপের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। বহু বছর ধরে যে শান্তি বজায় ছিল, তা শেষ হয়ে যায়।তিনি ১০০ বিলিয়ন ইউরোর একটি এককালীন বিশেষ তহবিল গঠন করেন, যা শুধুমাত্র বুন্ডেসভেরের আধুনিকীকরণের জন্য ব্যয় করা হবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে শলৎসকে সংবিধান সংশোধন করতে হয়, যা জার্মানিতে এক বিরল পদক্ষেপ।জার্মানি এখন ইউরোপের প্রতিরক্ষা নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চায় এবং সামরিক শক্তি বাড়াতে অপ্রতিরোধ্য পদক্ষেপ নিচ্ছে। পরিবর্তিত বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে, দেশটি ন্যাটোর শক্তিশালী মিত্রে পরিণত হওয়ার পথে এগোচ্ছে।