Dhaka 9:58 pm, Saturday, 15 March 2025

চিরনিদ্রায় শায়িত সাম্যের পৃথিবীর স্বপ্নদ্রষ্টা হায়দার আকবর খান রনো

বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক হায়দার আকবর খান রনোর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১৩ মে) বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে বাবা, মা ও ছোট ভাইয়ের পাশে দাফন করা হয় জীবনভর মেহনতি মানুষের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হয়ে থাকা এই কমিউনিস্ট নেতাকে। এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় তার জানাজা। সকালে সিপিবির দলীয় কার্যালয় মুক্তিভবনের সামনে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রনোর মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ তো বটেই, তাকে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে উপস্থিত হয় বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল। লাল সালামে শেষ বিদায় জানানো হয় সাম্যের পৃথিবী গড়ার অন্যতম এ সৈনিককে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে তার ভূমিকাকে গার্ড অব অনারে ভূষিত করে রাষ্ট্র।

আরো পড়ুন: কমিউনিস্ট নেতা রনোর জানাজা সোমবার, দাফন বনানী কবরস্থানে

পরিচিত ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা বলেন, সারা বিশ্বেই বাম ঘরানার বহু মানুষ একটা সময় ডান পন্থায় ঝুঁকে পড়তে বাধ্য হন। কিন্তু ছয় দশকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে এমন কোনো নজির নেই হায়দার আকবর খান রনোর। আদর্শ আর ন্যায়ের প্রতি অবিচল ছিলেন ‘রনো ভাই’। ৮২ বছরের জীবনে রাজনৈতিক কারণে চারবার কারাবরণ এবং সাতবার আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছেন এই বামপন্থী নেতা। হায়দার আকবর খান রনোর বিশ্বাস ছিল, মানুষের ইতিহাস হলো সাম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ইতিহাস। স্পার্টাকাস থেকে শুরু করে সূর্যসেন- সবাই মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করে গেছেন। ফলে পুঁজিবাদের পতন অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু ইতিহাসের চূড়ান্ত রায় এখনও অধরা। জীবিত রনো মৃত্যুর পর আরও বেশি বলবান- সেই বিশ্বাস তার আদর্শিক সৈনিকদের।

আরো পড়ুন:উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীর জামানত বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ

গত শুক্রবার দিবাগত রাত ২টায় রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মার্কসবাদী তাত্ত্বিক হায়দার আকবর খান রনো। ১৯৪২ সালের ৩১ আগস্ট অবিভক্ত ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পৈতৃক নিবাস নড়াইলের বরাশুলা গ্রামে। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও নেতা। একাধিক বই লিখেছেন জীবদ্দশায়। ২০১০ সালে মতভিন্নতার কারণে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ছেড়ে সিপিবিতে যোগ দেন রনো। ২০১২ সালে হন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য। এরপর থেকে তিনি দলটির উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।

One thought on “চিরনিদ্রায় শায়িত সাম্যের পৃথিবীর স্বপ্নদ্রষ্টা হায়দার আকবর খান রনো

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

চিরনিদ্রায় শায়িত সাম্যের পৃথিবীর স্বপ্নদ্রষ্টা হায়দার আকবর খান রনো

Update Time : 05:37:17 pm, Monday, 13 May 2024

বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক হায়দার আকবর খান রনোর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১৩ মে) বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে বাবা, মা ও ছোট ভাইয়ের পাশে দাফন করা হয় জীবনভর মেহনতি মানুষের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হয়ে থাকা এই কমিউনিস্ট নেতাকে। এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় তার জানাজা। সকালে সিপিবির দলীয় কার্যালয় মুক্তিভবনের সামনে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রনোর মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ তো বটেই, তাকে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে উপস্থিত হয় বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল। লাল সালামে শেষ বিদায় জানানো হয় সাম্যের পৃথিবী গড়ার অন্যতম এ সৈনিককে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে তার ভূমিকাকে গার্ড অব অনারে ভূষিত করে রাষ্ট্র।

আরো পড়ুন: কমিউনিস্ট নেতা রনোর জানাজা সোমবার, দাফন বনানী কবরস্থানে

পরিচিত ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা বলেন, সারা বিশ্বেই বাম ঘরানার বহু মানুষ একটা সময় ডান পন্থায় ঝুঁকে পড়তে বাধ্য হন। কিন্তু ছয় দশকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে এমন কোনো নজির নেই হায়দার আকবর খান রনোর। আদর্শ আর ন্যায়ের প্রতি অবিচল ছিলেন ‘রনো ভাই’। ৮২ বছরের জীবনে রাজনৈতিক কারণে চারবার কারাবরণ এবং সাতবার আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছেন এই বামপন্থী নেতা। হায়দার আকবর খান রনোর বিশ্বাস ছিল, মানুষের ইতিহাস হলো সাম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ইতিহাস। স্পার্টাকাস থেকে শুরু করে সূর্যসেন- সবাই মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করে গেছেন। ফলে পুঁজিবাদের পতন অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু ইতিহাসের চূড়ান্ত রায় এখনও অধরা। জীবিত রনো মৃত্যুর পর আরও বেশি বলবান- সেই বিশ্বাস তার আদর্শিক সৈনিকদের।

আরো পড়ুন:উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীর জামানত বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ

গত শুক্রবার দিবাগত রাত ২টায় রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মার্কসবাদী তাত্ত্বিক হায়দার আকবর খান রনো। ১৯৪২ সালের ৩১ আগস্ট অবিভক্ত ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পৈতৃক নিবাস নড়াইলের বরাশুলা গ্রামে। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও নেতা। একাধিক বই লিখেছেন জীবদ্দশায়। ২০১০ সালে মতভিন্নতার কারণে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ছেড়ে সিপিবিতে যোগ দেন রনো। ২০১২ সালে হন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য। এরপর থেকে তিনি দলটির উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।