
মায়ের শরীরে জন্ম নেয় নবজাতকের ভ্রূণ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বিকশিত হয়। পূর্ণতা পায় মানবশিশুর অবয়ব। মায়ের গর্ভে শিশুর বেড়ে ওঠা, সুস্থতা, ওজন, মেধা, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা, জন্মগত ত্রুটি—এসবের অধিকাংশই নির্ভর করে মায়ের স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার ওপর।
গর্ভকালকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে ভাগ করা হয়।
প্রথম ট্রাইমেস্টার
(১-১৩ সপ্তাহ)
এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।ফলে দুর্বলতা, ক্লান্তি ভাব, অনিদ্রা এবং ওজন কমে যাওয়ার মতো ব্যাপারগুলো ঘটে থাকে। তাই গর্ভের প্রথম তিন মাস রোজা না রাখাই ভালো।
দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টার
(১৪-২৬ সপ্তাহ)
গর্ভকালীন এই সময়কে ‘স্বর্ণালি সময়’ বলা হয়। প্রথম ট্রাইমেস্টারের অপ্রীতিকর উপসর্গগুলো থেকে এ সময় মুক্তি পাওয়া যায়। ফলে মায়ের খাবার গ্রহণ এবং ঘুমের যথেষ্ট উন্নতি ঘটে। তবে তার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
তৃতীয় ট্রাইমেস্টার
(২৭-৪০ সপ্তাহ)
প্রথম ট্রাইমেস্টারের মতো এই ট্রাইমেস্টারেও প্রয়োজন কিছু বাড়তি যত্ন ও সতর্কতার। এ সময় শিশুর দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে। রোজা রাখার ফলে যদি মায়ের ওজন কমে যায় কিংবা শিশুর নড়াচড়া কম করে, তবে রোজা না রাখাই ভালো এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
লক্ষ রাখতে হবে
• সাহ্রি, ইফতার ও রাতের খাবারের পুষ্টিমানের দিকে মনোযোগী হতে হবে
• রাত জাগার অভ্যাস বাদ দিয়ে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে
• রোজার ক্লান্তি কমাতে বিশ্রামের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে হবে
• বেশি হাঁটা এবং অতিরিক্ত পরিশ্রম করা যাবে না
• পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে
• দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে।
যখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন
• গর্ভের সন্তান নড়াচড়া না করলে
• তলপেটে ব্যথা অনুভব হলে
• পর্যাপ্ত বিশ্রাম করার পরও ক্লান্ত বা দুর্বল লাগলে
• বমি ও মাথাব্যথা হলে
• জ্বর জ্বর ভাব লাগলে
• গর্ভের শিশুর ওজন যদি না বাড়ে
• গর্ভস্থ পানি বা অ্যামনিওটিক ফ্লুইড কমে গেলে
• ঘন ঘন প্রস্রাব হলে বা প্রস্রাবের সময় ব্যথা অনুভব হলে।