Dhaka 8:57 am, Saturday, 15 March 2025

চিকিৎসার জন্য চেয়েছিলেন ছুটি, না পেয়ে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে অফিস সহায়কের মৃত্যু

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অফিসে যাওয়ার পথে আকস্মিক বুকে ব্যাথায় রাস্তার মধ্যেই ঢলে পড়ে মৃত্যু হয় জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক অফিস সহায়কের।
মৃত অফিস সহায়ক মো:মিজানুর রহমান(৪৫) মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার ইমাম পুর ইউনিয়নের চর কালিপুরা(বেরু মোল্লাকান্দি) গ্রামের মৃত নুরুল ইসলাম মোল্লার ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বুধবার(৪সেপ্টেম্বর) সকাল ৮ঘটিকায় অফিস থেকে  ফোন পেয়ে অসুস্থ শরীর নিয়ে অফিসে যাওয়ার পথে ষোলআনী ঝাপটা সড়কে ঢলে পড়ে সড়কেই মারা যান।
মিজানুর রহমান এর স্ত্রী লিজা আক্তার জানান,এক সপ্তাহ যাবৎ আমার স্বামী অসুস্থ ছিল,শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন,গতকালও অফিস করে অসুস্থ হয়ে যায়,ছুটি দেয় নাই উল্টো গেটের বাহিরে দাঁড় করিয়ে রাখে,এ সময় ঝিমুনি আসলে তাঁকে আট তলা ফেলে দেওয়া,চামড়া তুলে নেওয়ার  হুমকি দেয়।আজ সকালে অফিস থেকে ফোন আসলে অসুস্থ শরীর নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।তাঁরা যদি আমার স্বামীকে ছুটি দিত তাইলে আমরা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারতাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অফিস সহায়ক জানান,মিজানুর রহমান জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত -৩ কর্মরত ছিলেন,যার দ্বায়িত্বে ছিলেন বিচারক নাজনীন আক্তার,তিনি মাতৃকালীন ছুটিতে থাকায় অতি:দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৪এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো:শহিদুল ইসলাম।তিনি ছুটি দেন নাই মিজানকে।
এ দিকে সহকর্মীর মৃত্যুতে শোকাবহ অফিস সহায়ক’রা একযোগে কর্মবিরতি পালন করে মুন্সীগঞ্জ সদর থেকে গজারিয়ায় নিহতের বাড়িতে উপস্থিত হলে এক হৃদয় বিদায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
এ সময় মৃতের বড় ভাই আলী আহমেদ মোল্লা বলেন,আমার ভাইয়ের এক ছেলে,দুইটা মেয়ে।ছেলেটা অটিজম আক্রান্ত,বুদ্ধি প্রতিবন্ধী,আমরা এই বিচারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো:শহিদুল ইসলামকে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নাই।
ইমামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: হাফিজুজ্জামান খাঁন জিতু বলেন,ছেলেটা আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা, অনেক ভাল একটা ছেলে ছিল,ঘটনাটা শুনে মর্মাহত হয়েছি।
খবর পেয়ে জেলা অতি:চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী কামরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মরহুমের বাড়িতে গিয়ে শোক সন্তোপ্ত পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন।এ সময় অর্ধশত অফিস সহায়ক উপস্থিত ছিলেন।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

চিকিৎসার জন্য চেয়েছিলেন ছুটি, না পেয়ে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে অফিস সহায়কের মৃত্যু

Update Time : 06:19:26 pm, Thursday, 5 September 2024
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অফিসে যাওয়ার পথে আকস্মিক বুকে ব্যাথায় রাস্তার মধ্যেই ঢলে পড়ে মৃত্যু হয় জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক অফিস সহায়কের।
মৃত অফিস সহায়ক মো:মিজানুর রহমান(৪৫) মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার ইমাম পুর ইউনিয়নের চর কালিপুরা(বেরু মোল্লাকান্দি) গ্রামের মৃত নুরুল ইসলাম মোল্লার ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বুধবার(৪সেপ্টেম্বর) সকাল ৮ঘটিকায় অফিস থেকে  ফোন পেয়ে অসুস্থ শরীর নিয়ে অফিসে যাওয়ার পথে ষোলআনী ঝাপটা সড়কে ঢলে পড়ে সড়কেই মারা যান।
মিজানুর রহমান এর স্ত্রী লিজা আক্তার জানান,এক সপ্তাহ যাবৎ আমার স্বামী অসুস্থ ছিল,শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন,গতকালও অফিস করে অসুস্থ হয়ে যায়,ছুটি দেয় নাই উল্টো গেটের বাহিরে দাঁড় করিয়ে রাখে,এ সময় ঝিমুনি আসলে তাঁকে আট তলা ফেলে দেওয়া,চামড়া তুলে নেওয়ার  হুমকি দেয়।আজ সকালে অফিস থেকে ফোন আসলে অসুস্থ শরীর নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।তাঁরা যদি আমার স্বামীকে ছুটি দিত তাইলে আমরা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারতাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অফিস সহায়ক জানান,মিজানুর রহমান জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত -৩ কর্মরত ছিলেন,যার দ্বায়িত্বে ছিলেন বিচারক নাজনীন আক্তার,তিনি মাতৃকালীন ছুটিতে থাকায় অতি:দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৪এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো:শহিদুল ইসলাম।তিনি ছুটি দেন নাই মিজানকে।
এ দিকে সহকর্মীর মৃত্যুতে শোকাবহ অফিস সহায়ক’রা একযোগে কর্মবিরতি পালন করে মুন্সীগঞ্জ সদর থেকে গজারিয়ায় নিহতের বাড়িতে উপস্থিত হলে এক হৃদয় বিদায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
এ সময় মৃতের বড় ভাই আলী আহমেদ মোল্লা বলেন,আমার ভাইয়ের এক ছেলে,দুইটা মেয়ে।ছেলেটা অটিজম আক্রান্ত,বুদ্ধি প্রতিবন্ধী,আমরা এই বিচারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো:শহিদুল ইসলামকে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নাই।
ইমামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: হাফিজুজ্জামান খাঁন জিতু বলেন,ছেলেটা আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা, অনেক ভাল একটা ছেলে ছিল,ঘটনাটা শুনে মর্মাহত হয়েছি।
খবর পেয়ে জেলা অতি:চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী কামরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মরহুমের বাড়িতে গিয়ে শোক সন্তোপ্ত পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন।এ সময় অর্ধশত অফিস সহায়ক উপস্থিত ছিলেন।