
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে ক্লিনিক্যাল ক্লাস ও হাসপাতাল চালুর দাবিতে লাগাতার আন্দোলনে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন, মানববন্ধন, বিক্ষোভ, স্মারকলিপি প্রদান ও সড়ক অবরোধ করেছেন।
কলেজের দ্বিতীয় বর্ষ থেকে শুরু হয় হাতে-কলমে ক্লাস বা ‘ওয়ার্ড সেবা’। শিক্ষার্থীরা রোগীর সংস্পর্শে থেকে চিকিৎসা শিক্ষা গ্রহণ করেন। তবে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল না থাকায় এই কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ফলে ব্যবহারিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম বলেন, “ভবন তৈরি হলেও হাসপাতালে কোনো কার্যক্রম চালু হয়নি। রোগী নেই, ক্লাস নেই। আমরা শুধু তত্ত্বীয় জ্ঞান নিয়েই পাস করছি।”
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২৩ সালের নভেম্বরে কলেজটি মদনপুরে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়। তবে এখানকার ৫০০ শয্যার হাসপাতাল এখনো চালু হয়নি। অবকাঠামো নির্মাণ প্রায় শেষ হলেও জনবল নিয়োগ না হওয়ায় হাসপাতাল চালু করা যাচ্ছে না।
কলেজে ৭৭টি শিক্ষকের পদের বিপরীতে আছেন ৪৫ জন। অনেক বিভাগে শিক্ষক সংকট রয়েছে। শিক্ষকেরা সিলেট থেকে আসেন, কারণ তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় আবাসনের ব্যবস্থা এখনো হয়নি।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুস্তাক আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। আপাতত জেলা সদর হাসপাতালে নিয়মিত ক্লিনিক্যাল ক্লাসের ব্যবস্থা করা হবে।”
প্রকল্প পরিচালক স্বাধীন কুমার দাস জানান, “হাসপাতাল ভবনের কাজ প্রায় শেষ। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই হাসপাতাল চালু হবে।”
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অতনু ভট্টাচার্য বলেন, “ক্লিনিক্যাল এক্সপোজার ছাড়া একজন চিকিৎসকের শিক্ষা অসম্পূর্ণ। রোগী ছাড়া হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ সম্ভব নয়।”
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তাঁদের দাবির মধ্যে রয়েছে—হাসপাতাল দ্রুত চালু, সপ্তাহে ছয় দিন ক্লিনিক্যাল ক্লাস, যাতায়াতের জন্য তিনটি বাস ও পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ।