
হাড় ক্যানসারে স্বাভাবিক হাড়ের কোষগুলো ধ্বংস হয় এবং খুব অল্প সময়ে শরীরের অন্য অংশগুলোয় ছড়িয়ে যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে মেটাস্টেসিস। এ ক্যানসার অত্যন্ত দুর্লভ। হাড়ের বেশির ভাগ টিউমার হয় বিনাইন, অর্থাৎ ক্যানসার নয়। তবে আক্রান্ত হলে হাড় খুব দুর্বল হয়ে পড়ে এবং হাড় ভাঙা বা অন্যান্য সমস্যা তৈরি হতে থাকে।
প্রাথমিক হাড় ক্যানসার : প্রাথমিক পর্যায়ে টিউমার হাড়ে বাসা বাঁধতে পারে। কী কারণে বাসা বাঁধে, বিশেষজ্ঞরা এ সম্পর্কে নিশ্চিত নন। তবে জিনগত ভূমিকা থাকতে পারে বলে মনে করা হয়।
যে বয়সে হয়ে থাকে : অস্টিওসারকোমা নামে হাড় ক্যানসার সাধারণত টিনএজার বা যুবকদের হয়, ইউইংস সারকোমা বয়স ৫ ও ২০ বছরের মধ্যে ঘটে। কন্ড্রোসারকোমা পাওয়া যায় ৪০ ও ৭০ বছর বয়সীর মধ্যে।
মাধ্যমিক হাড় ক্যানসার : এক্ষেত্রে ক্যানসার সাধারণত শরীরের অন্য অংশ থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী সময় অন্য হাড়গুলোকে আক্রান্ত করে থাকে। একে বলে মেটাসটেটিক ক্যানসার। সাধারণত স্তন ক্যানসার, প্রোস্টেট ক্যানসার, ফুসফুস ক্যানসার থেকে মাধ্যমিক স্তরের হাড় ক্যানসার হতে পারে।
লক্ষণ : আক্রান্ত স্থান ফুলে ওঠা; আক্রান্ত স্থানে ব্যথা, যা হাঁটাচলা বা কাজকর্মের সময় বাড়ে; তীব্র জ্বর আসে; ওজন কমে যায়; কাশিসহ নানা ধরনের লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়।
হাড় ক্যানসারের ঝুঁকি : এ ক্যানসারের ঝুঁকি অন্যান্য ক্যানসারের তুলনায় মোটেই কম নয়। ক্যানসার মানেই ঝুঁকি; মরণঘাতী হিসেবেই ধরে নিতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লেই কেবল চিকিৎসায় নিরাময় সম্ভব।
যেভাবে ধরা পড়ে : ক্যানসারটি অনেক সময় লক্ষণহীন। ঘটনাক্রমে অন্য সমস্যার জন্য এক্স-রে করতে গিয়ে এ ক্যানসার ধরা পড়তে পারে।
ডায়াগনোসিস : এ রোগ নিরূপণে প্রয়োজন হয় রোগীর ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা ও ইমেজিং (এক্স-রে, সিটিস্ক্যান, এমআরআই স্ক্যান, পেট-স্ক্যান, বোন-স্ক্যান ও কিছু ল্যাবরেটরি পরীক্ষাÑ আলফা ফিটো প্রোটিন, কারসিনো এম্ব্রায়নিক এন্টিজেন)। তবে সুনিশ্চিতভাবে হাড়ের ক্যানসার নির্ণয়ে বায়োপসি করা প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।