Dhaka 11:37 pm, Thursday, 20 March 2025

ঈদ সামনে রেখে সক্রিয় চোরাকারবারি

ঈদ সামনে রেখে সক্রিয় চোরাকারবারি

ঈদ সামনে রেখে সিলেটের সীমান্ত এলাকায় তৎপরতা বাড়িয়েছে চোরাকারবারি চক্র। সিলেটসহ দেশের ঈদবাজার টার্গেট করে ভারত থেকে চোরাপথে আনছে শাড়ি, থ্রি পিস, লেহেঙ্গা, থানকাপড় ও কসমেটিকস। আগে চোরাপথে আসা পণ্যের মধ্যে বেশি ছিল গরু-মহিষ, চিনি, গরম মসলা ও কমলা। কিন্তু ঈদ ঘনিয়ে আসায় চোরাই পণ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে কাপড় ও কসমেটিকস। আগে বিভিন্ন ধরনের কাপড় ও প্রসাধনসামগ্রী মাঝেমধ্যে ধরা পড়লেও এখন বিজিবি ও পুলিশের হাতে জব্দ হচ্ছে বিশাল চালান। গত এক মাসে বিজিবি-৪৮ ব্যাটালিয়ন ও মহানগর পুলিশের হাতে জব্দ হয়েছে অন্তত ৫০ কোটি টাকার চোরাই পণ্য। এর মধ্যে গড়ে প্রতিদিন কোটি টাকার ভারতীয় কাপড় ও কসমেটিকস সামগ্রী জব্দ হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

চোরাচালান বাড়ায় ঈদপণ্যের আমদানি কমেছে। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন ব্যবসায়ীরা। সূত্র জানান, কয়েক বছর ধরে সিলেট সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান ‘ওপেন সিক্রেট’। একসময় সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আসত গরু। দুই বছর ধরে চোরাচালানে যুক্ত হয় চিনি। দেশে চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ভারত থেকে অনেকটা অবাধে আসতে থাকে চিনি। সীমান্তে বিজিবি ও সড়কে পুলিশ ‘ম্যানেজ’ করে চোরাকারবারি চক্র প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার চিনি আনতে থাকে। চোরাচালানের সঙ্গে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়িত থাকায় চোরাই পণ্যে ছেয়ে যায় সিলেট।

এমনকি সিলেট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হতো ভারতীয় ‘বুুঙ্গার’ চিনি। কিন্তু ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পরিবর্তন আসে বিজিবি ও র‌্যাবে। সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করে বিজিবি। সড়কেও টহল বাড়ায় পুলিশ। এতে একের পর এক ধরা পড়তে থাকে চোরাই পণ্যের চালান। ৫ আগস্টের পর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কতিপয় সুবিধাবাদী নেতা চোরাচালানে যুক্ত হলে দল থেকে তাদের বহিষ্কারও করা হয়। রাজনৈতিক মদদ কমে যাওয়ায় বাড়তে থাকে অভিযানও।প্রতি বছর এ চোরাচালান অব্যাহত থাকলেও এ বছর অবৈধ ব্যবসা বহুগুণে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

ঈদ সামনে রেখে সক্রিয় চোরাকারবারি

Update Time : 12:57:40 pm, Thursday, 20 March 2025

ঈদ সামনে রেখে সিলেটের সীমান্ত এলাকায় তৎপরতা বাড়িয়েছে চোরাকারবারি চক্র। সিলেটসহ দেশের ঈদবাজার টার্গেট করে ভারত থেকে চোরাপথে আনছে শাড়ি, থ্রি পিস, লেহেঙ্গা, থানকাপড় ও কসমেটিকস। আগে চোরাপথে আসা পণ্যের মধ্যে বেশি ছিল গরু-মহিষ, চিনি, গরম মসলা ও কমলা। কিন্তু ঈদ ঘনিয়ে আসায় চোরাই পণ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে কাপড় ও কসমেটিকস। আগে বিভিন্ন ধরনের কাপড় ও প্রসাধনসামগ্রী মাঝেমধ্যে ধরা পড়লেও এখন বিজিবি ও পুলিশের হাতে জব্দ হচ্ছে বিশাল চালান। গত এক মাসে বিজিবি-৪৮ ব্যাটালিয়ন ও মহানগর পুলিশের হাতে জব্দ হয়েছে অন্তত ৫০ কোটি টাকার চোরাই পণ্য। এর মধ্যে গড়ে প্রতিদিন কোটি টাকার ভারতীয় কাপড় ও কসমেটিকস সামগ্রী জব্দ হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

চোরাচালান বাড়ায় ঈদপণ্যের আমদানি কমেছে। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন ব্যবসায়ীরা। সূত্র জানান, কয়েক বছর ধরে সিলেট সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান ‘ওপেন সিক্রেট’। একসময় সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আসত গরু। দুই বছর ধরে চোরাচালানে যুক্ত হয় চিনি। দেশে চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ভারত থেকে অনেকটা অবাধে আসতে থাকে চিনি। সীমান্তে বিজিবি ও সড়কে পুলিশ ‘ম্যানেজ’ করে চোরাকারবারি চক্র প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার চিনি আনতে থাকে। চোরাচালানের সঙ্গে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়িত থাকায় চোরাই পণ্যে ছেয়ে যায় সিলেট।

এমনকি সিলেট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হতো ভারতীয় ‘বুুঙ্গার’ চিনি। কিন্তু ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পরিবর্তন আসে বিজিবি ও র‌্যাবে। সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করে বিজিবি। সড়কেও টহল বাড়ায় পুলিশ। এতে একের পর এক ধরা পড়তে থাকে চোরাই পণ্যের চালান। ৫ আগস্টের পর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কতিপয় সুবিধাবাদী নেতা চোরাচালানে যুক্ত হলে দল থেকে তাদের বহিষ্কারও করা হয়। রাজনৈতিক মদদ কমে যাওয়ায় বাড়তে থাকে অভিযানও।প্রতি বছর এ চোরাচালান অব্যাহত থাকলেও এ বছর অবৈধ ব্যবসা বহুগুণে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।