Dhaka 11:01 pm, Monday, 19 May 2025

মেহেরপুরে কমলা ও মালটা চাষির মুখে তৃপ্তির হাসি

বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে কমলা। প্রতিটি গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে শোভা পাচ্ছে হলুদ ও সবুজ রংয়ের কমলা। কমলার ভরে নুইয়ে পড়েছে গাছের ডালপালা। বাতাসে ছড়াচ্ছে কমলার সুস্বাদু মৌ মৌ ঘ্রাণ। গাছের ডালে ডালে দোল খাচ্ছে চাষির স্বপ্ন, পাকা ও আধাপাকা কমলা। বাগান দেখতে ও কমলা কিনতে বিভিন্ন স্থান থেকে আসছেন মানুষজন। বাগান ঘুরে দেখা গেছে, সারি সারি কমলার গাছ।

হলুদ-সবুজ রঙের কমলা লেবুতে ছেয়ে গেছে পুরো বাগান। যা দেখে যে কারোরই মন ভরে উঠবে। কমলার সাথে আছে মাল্টাও। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা কসবা এলাকায় নুরুজ্জামান রুবেল নামের এক যুবক প্রথমে দশ কাঠা জমিতে কমলা ও মাল্টা বাগান করেন। গাছে ভালো ফলন ও লাভজনক হওয়ায় পরে সাড়ে সাত বিঘা জমিতে কমলা ও আড়াই বিঘা জমিতে মাল্টা বাগান করেছেন। রোপণের প্রায় চার বছরের মাথায় দেড় বিঘা জমির মাল্টা তিন লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছেন। দুই বছরের মাথায় অল্প ফল ধরলেও এ বছর পুরোপুরি সফলতা আসে। বর্তমানে যে পরিমাণ কমলা গাছে আছে তা প্রায় ১০ লক্ষ টাকায় বিক্রি হবে বলে আশাবাদী এই তরুণ।

বাগানে রয়েছে চায়না, দার্জিলিং ও মেন্ডারিং জাতের কমলা ও মাল্টা এবং পেয়ারা। বাগান দেখতে আসা সজিব বলেন, দেশের দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলের আবহাওয়া অনুকূল না হওয়ায় সাধারণত চায়না কমলার ফলন ভালো হয় না। কিন্তু আমাদের সে ধারণা পাল্টে দিয়েছে রুবেল ভাই। বাগানে প্রতিটি গাছে কমলার ফলন দেখে আমরা অভিভূত হয়েছি। মনিরুল ইসলাম বলেন, মেহেরপুরের মাটিতে কমলা হচ্ছে এটা অবাক করার মতো।

বাগান মালিক নুরুজ্জামান রুবেল বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগরে একটি বাগান দেখে নিজে বাগান করবো সিদ্ধান্ত নিই। ওমর ফারুক কাছ থেকে কমলা ও সাখাওয়াত ভাইয়ের কাছ থেকে মালটার চারা নিয়ে প্রথমে ১০ কাঠা শুরু করি। পরে ভালো ফলন ও লাভজনক হওয়ায় সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে বাগান করি। বাগানে তিন জাতের সাড়ে ৭’শ গাছ আছে।

বাগানের বয়স প্রায় চার বছর হতে চলেছে। এবারই প্রতিটি গাছে প্রত্যাশার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি ফল এসেছে। ইতোমধ্যেই দেড় বিঘা জমির মালটা বিক্রি করেছি তিন লক্ষ টাকায়। একেকটি গাছ দেখলে মনপ্রাণ জুড়িয়ে যায়। যখন দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন কমলা বাগান দেখতে আসে তখন নিজেকে সফল কৃষক মনে হয়। এছাড়া ফলের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। নিজ জেলাসহ ঢাকাতে ফল পাঠানো হচ্ছে। কৃষি বিভাগের প্রতি অভিযোগ করে রুবেল বলেন, কৃষি অফিসের কেউই আসে না এবং পরামর্শ কিংবা সহযোগিতা করে না। কৃষি বিভাগ যদি এই কমলা চাষের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সহযোগিতা দেয় তাহলে মানুষের মধ্যে কমলা লেবু চাষের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হবে। ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভাবে কমলা লেবুর উৎপাদন বাড়বে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

মেহেরপুরে কমলা ও মালটা চাষির মুখে তৃপ্তির হাসি

Update Time : 09:53:22 pm, Wednesday, 4 December 2024

বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে কমলা। প্রতিটি গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে শোভা পাচ্ছে হলুদ ও সবুজ রংয়ের কমলা। কমলার ভরে নুইয়ে পড়েছে গাছের ডালপালা। বাতাসে ছড়াচ্ছে কমলার সুস্বাদু মৌ মৌ ঘ্রাণ। গাছের ডালে ডালে দোল খাচ্ছে চাষির স্বপ্ন, পাকা ও আধাপাকা কমলা। বাগান দেখতে ও কমলা কিনতে বিভিন্ন স্থান থেকে আসছেন মানুষজন। বাগান ঘুরে দেখা গেছে, সারি সারি কমলার গাছ।

হলুদ-সবুজ রঙের কমলা লেবুতে ছেয়ে গেছে পুরো বাগান। যা দেখে যে কারোরই মন ভরে উঠবে। কমলার সাথে আছে মাল্টাও। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা কসবা এলাকায় নুরুজ্জামান রুবেল নামের এক যুবক প্রথমে দশ কাঠা জমিতে কমলা ও মাল্টা বাগান করেন। গাছে ভালো ফলন ও লাভজনক হওয়ায় পরে সাড়ে সাত বিঘা জমিতে কমলা ও আড়াই বিঘা জমিতে মাল্টা বাগান করেছেন। রোপণের প্রায় চার বছরের মাথায় দেড় বিঘা জমির মাল্টা তিন লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছেন। দুই বছরের মাথায় অল্প ফল ধরলেও এ বছর পুরোপুরি সফলতা আসে। বর্তমানে যে পরিমাণ কমলা গাছে আছে তা প্রায় ১০ লক্ষ টাকায় বিক্রি হবে বলে আশাবাদী এই তরুণ।

বাগানে রয়েছে চায়না, দার্জিলিং ও মেন্ডারিং জাতের কমলা ও মাল্টা এবং পেয়ারা। বাগান দেখতে আসা সজিব বলেন, দেশের দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলের আবহাওয়া অনুকূল না হওয়ায় সাধারণত চায়না কমলার ফলন ভালো হয় না। কিন্তু আমাদের সে ধারণা পাল্টে দিয়েছে রুবেল ভাই। বাগানে প্রতিটি গাছে কমলার ফলন দেখে আমরা অভিভূত হয়েছি। মনিরুল ইসলাম বলেন, মেহেরপুরের মাটিতে কমলা হচ্ছে এটা অবাক করার মতো।

বাগান মালিক নুরুজ্জামান রুবেল বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগরে একটি বাগান দেখে নিজে বাগান করবো সিদ্ধান্ত নিই। ওমর ফারুক কাছ থেকে কমলা ও সাখাওয়াত ভাইয়ের কাছ থেকে মালটার চারা নিয়ে প্রথমে ১০ কাঠা শুরু করি। পরে ভালো ফলন ও লাভজনক হওয়ায় সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে বাগান করি। বাগানে তিন জাতের সাড়ে ৭’শ গাছ আছে।

বাগানের বয়স প্রায় চার বছর হতে চলেছে। এবারই প্রতিটি গাছে প্রত্যাশার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি ফল এসেছে। ইতোমধ্যেই দেড় বিঘা জমির মালটা বিক্রি করেছি তিন লক্ষ টাকায়। একেকটি গাছ দেখলে মনপ্রাণ জুড়িয়ে যায়। যখন দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন কমলা বাগান দেখতে আসে তখন নিজেকে সফল কৃষক মনে হয়। এছাড়া ফলের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। নিজ জেলাসহ ঢাকাতে ফল পাঠানো হচ্ছে। কৃষি বিভাগের প্রতি অভিযোগ করে রুবেল বলেন, কৃষি অফিসের কেউই আসে না এবং পরামর্শ কিংবা সহযোগিতা করে না। কৃষি বিভাগ যদি এই কমলা চাষের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সহযোগিতা দেয় তাহলে মানুষের মধ্যে কমলা লেবু চাষের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হবে। ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভাবে কমলা লেবুর উৎপাদন বাড়বে।