Dhaka 9:34 pm, Saturday, 22 March 2025

বিশ্বব্যাপী পালিত এক নবজাগরণের উৎসব

অন্তত এক মাস আগ থেকে ইরানে নববর্ষের প্রস্তুতি শুরু হয়।

তেহরানের বসন্তের বাতাসের সঙ্গে রাস্তায় ভেসে আসে মিষ্টি ফুলের ঘ্রাণ। এ সময় শহরের প্রতিটি ফুলের দোকানে বিক্রি হয় বসন্তের প্রতীক ড্যাফোডিল। পাহাড় থেকে আসা ঠান্ডা বাতাস আর মাঝে মাঝে বয়ে যাওয়া বৃষ্টি শুভ লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়, যা মানুষকে আনন্দ ও স্বস্তি দেয়। এই পরিবেশই স্মরণ করিয়ে দেয় নওরোজ সমাগত।ফারসি শব্দ ‘নওরোজ’ অর্থ ‘নতুন দিন’, যা ফারসি সৌর ক্যালেন্ডারের প্রথম দিন ও নববর্ষের সূচনা। প্রায় তিন হাজার বছরের পুরানো ইতিহাস এটি। উৎসবটি মূলত শীতের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে উত্তর গোলার্ধে দিন দীর্ঘ হলে আসে। তখন কোটি কোটি মানুষ ফারসি নববর্ষ নওরোজ উদযাপনের প্রস্তুতি নেয়। নতুন শুরুর প্রতীক হিসেবে পরিচিত এই উৎসব বসন্তের আগমনী বার্তাও বহন করে।

অন্তত এক মাস আগ থেকে ইরানে নববর্ষের প্রস্তুতি শুরু হয়। এ সময় মানুষ ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে নিজেদের ব্যস্ত রাখে। যাকে  ‘খানেহ তেকোনি বা ঘর ঝাঁকানো’ বলা হয়।

 

নওরোজকে ইসলামের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গেও যুক্ত করা হয়। শিয়া সম্প্রদায়ের মতে, এই দিনে প্রথম শিয়া ইমাম ও ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (আ.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। একটি বিখ্যাত গল্প-কাহিনীতে বলা হয়েছে, নওরোজের দিনে ইমাম আলী (আ.)-কে উপহার হিসেবে ফালুদা (এক ধরনের গোলাপজল-মিশ্রিত মিষ্টি) প্রদান করা হয়। উপহার পাওয়ার কারণ জানতে পেরে তিনি বলেন, “যেন প্রতিটি দিনই নওরোজের মতো আনন্দময় হয়।”

শিয়া মতাদর্শ অনুযায়ী, ইমাম জাফর আল-সাদিক (আ.) নওরোজের দিন আল্লাহকে স্মরণ করার গুরুত্ব সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সপ্তম ইমাম মুসা কাজিম (আ.) বলেছেন, এই দিনটিতে আল্লাহ মানুষকে একত্ববাদ এবং তার ইবাদত করার অঙ্গীকার করিয়েছিলেন।

সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, “এই দিনে মহাবিশ্ব চলতে শুরু করে এবং পৃথিবীতে ফুল আবির্ভূত হয়। এ ছাড়া এই দিনে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.), মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে আবির্ভূত হন।”

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট সংবাদ
বিনামূল্যে ব্রেকিং নিউজ পেতে ok ক্লিক করুন OK .

বিশ্বব্যাপী পালিত এক নবজাগরণের উৎসব

Update Time : 12:39:53 pm, Saturday, 22 March 2025

তেহরানের বসন্তের বাতাসের সঙ্গে রাস্তায় ভেসে আসে মিষ্টি ফুলের ঘ্রাণ। এ সময় শহরের প্রতিটি ফুলের দোকানে বিক্রি হয় বসন্তের প্রতীক ড্যাফোডিল। পাহাড় থেকে আসা ঠান্ডা বাতাস আর মাঝে মাঝে বয়ে যাওয়া বৃষ্টি শুভ লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়, যা মানুষকে আনন্দ ও স্বস্তি দেয়। এই পরিবেশই স্মরণ করিয়ে দেয় নওরোজ সমাগত।ফারসি শব্দ ‘নওরোজ’ অর্থ ‘নতুন দিন’, যা ফারসি সৌর ক্যালেন্ডারের প্রথম দিন ও নববর্ষের সূচনা। প্রায় তিন হাজার বছরের পুরানো ইতিহাস এটি। উৎসবটি মূলত শীতের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে উত্তর গোলার্ধে দিন দীর্ঘ হলে আসে। তখন কোটি কোটি মানুষ ফারসি নববর্ষ নওরোজ উদযাপনের প্রস্তুতি নেয়। নতুন শুরুর প্রতীক হিসেবে পরিচিত এই উৎসব বসন্তের আগমনী বার্তাও বহন করে।

অন্তত এক মাস আগ থেকে ইরানে নববর্ষের প্রস্তুতি শুরু হয়। এ সময় মানুষ ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে নিজেদের ব্যস্ত রাখে। যাকে  ‘খানেহ তেকোনি বা ঘর ঝাঁকানো’ বলা হয়।

 

নওরোজকে ইসলামের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গেও যুক্ত করা হয়। শিয়া সম্প্রদায়ের মতে, এই দিনে প্রথম শিয়া ইমাম ও ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (আ.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। একটি বিখ্যাত গল্প-কাহিনীতে বলা হয়েছে, নওরোজের দিনে ইমাম আলী (আ.)-কে উপহার হিসেবে ফালুদা (এক ধরনের গোলাপজল-মিশ্রিত মিষ্টি) প্রদান করা হয়। উপহার পাওয়ার কারণ জানতে পেরে তিনি বলেন, “যেন প্রতিটি দিনই নওরোজের মতো আনন্দময় হয়।”

শিয়া মতাদর্শ অনুযায়ী, ইমাম জাফর আল-সাদিক (আ.) নওরোজের দিন আল্লাহকে স্মরণ করার গুরুত্ব সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সপ্তম ইমাম মুসা কাজিম (আ.) বলেছেন, এই দিনটিতে আল্লাহ মানুষকে একত্ববাদ এবং তার ইবাদত করার অঙ্গীকার করিয়েছিলেন।

সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, “এই দিনে মহাবিশ্ব চলতে শুরু করে এবং পৃথিবীতে ফুল আবির্ভূত হয়। এ ছাড়া এই দিনে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.), মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে আবির্ভূত হন।”