অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে যেন কোনো ভয়াবহ টর্নেডো বয়ে গেছে, আমরা এখন সেই ধ্বংসস্তূপ সরানোর চেষ্টা করছি।’ আজ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পর যখন তাকে দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়, তখন তিনি ‘বিস্মিত’ হয়েছিলেন।ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি কখনও ভাবিনি যে আমি সরকার পরিচালনা করব।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আগে কখনও সরকার চালাইনি, তাই সঠিকভাবে সব বোতাম চাপতে হয়েছে। তবে একবার যখন ব্যাপারটা ঠিক হয়ে গেল, আমরা সব গুছিয়ে নিতে শুরু করলাম।’আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং অর্থনীতি সংস্কারকে তিনি দেশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করেন।ড. ইউনূস বলেন, এখনও পরিষ্কার নয়, ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেবে কি না।তিনি বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) কী করবে, সেটা তাদের সিদ্ধান্ত, আমি সেটা নির্ধারণ করতে পারি না। নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে কে নির্বাচনে অংশ নেবে।’প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শান্তি-শৃঙ্খলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, পাশাপাশি অর্থনীতি। এটি একটি বিধ্বস্ত অর্থনীতি, পুরোপুরি বিপর্যস্ত অবস্থা।’
শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন এবং দীর্ঘ ১৬ বছর বাংলাদেশ শাসন করেন। তার শাসনামলে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধীদের কঠোরভাবে দমন করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।ছাত্র আন্দোলনের মুখে গত আগস্টে তিনি ক্ষমতা হারান এবং ভারতে পালিয়ে যান। বিক্ষোভকারীদের দাবির পর মুহাম্মদ ইউনূস দেশে ফিরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন।ড. ইউনূস জানান, আগামী ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে মার্চ ২০২৬ এর মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে, তবে তার সরকার আগে কিছু প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে চায়।
অন্তর্বর্তী সরকার সহিংসতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, আওয়ামী লীগের এমন অভিযোগকে নাকচ করে তিনি বলেন, ‘আদালত আছে, আইন আছে, পুলিশ আছে—তারা অভিযোগ জানাতে পারে। বিবিসি সাংবাদিকের কাছে অভিযোগ করলেই সমাধান হবে না, পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে হবে এবং দেখতে হবে আইন কীভাবে কাজ করে।’
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ বি এম মনিরুজ্জামান
নির্বাহী সম্পাদক: রিপন রুদ্র
যুগ্ম-সম্পাদক: জাকিয়া সুলতানা (লাভলী)