রাজধানীর মিরপুরের পরিচিত নারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা এখন বনানীর অভিজাত এলাকায় হোটেল ব্যবসার আড়ালে সমাজ বিধ্বংসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। জানা গেছে, বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের একটি ভবনের পঞ্চম তলায় 'হোটেল ইম্পেরিয়াল' নামক একটি আবাসিক হোটেল থেকে দেহব্যবসা ও মাদক কারবারের রমরমা ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে।
একটি সাধারণ ট্রেড লাইসেন্সের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা এই হোটেল বর্তমানে মিনি পতিতাপল্লী ও মাদক ব্যবসায়ীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। অথচ ভিআইপি এবং সিআইপি অধ্যুষিত বনানী এলাকায় প্রশাসনের নজরদারি একেবারে নেই বললেই চলে। হোটেল ইম্পেরিয়ালে রাত দিন চলছে নারী ও মাদক ব্যবসায়ীদের অবাধ আনাগোনা। উচ্চবিত্ত শ্রেণির অনেক ব্যক্তি এই অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত থাকায় বিষয়টি অনেকাংশে প্রকাশ্য রহস্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মাসোহারা দিয়ে বৈধতার নামে চলছে অবৈধ ব্যবসা, যেখানে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। হোটেলটির মালিক জীবন ওরফে সুমন এক সাক্ষাৎকারে জানান, তারা 'শুধু' স্কর্ট সার্ভিস প্রদান করেন। তবে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, অভিনব কৌশলে টাকার বিনিময়ে অনৈতিক সম্পর্ক ও দেহব্যবসা চালানো হচ্ছে। রুম ভাড়া নেওয়ার সময় অতিথিরা নারীসহ বিভিন্ন অবৈধ সুবিধা পেয়ে থাকে।
অভিযোগ রয়েছে, সুন্দরী নারীদের ব্যবহার করে অতিথিদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইলও করা হয়। হোটেলের আড়ালে মাদক কেনাবেচার পাশাপাশি বিভিন্ন বাসা-বাড়ি থেকেও যৌনকর্মী সংগ্রহ করে ভিআইপি সার্ভিসের নামে সরবরাহ করা হয়। চাঞ্চল্যকর তথ্য অনুযায়ী, এসব অপকর্মে জড়িতরা ছদ্মনাম ব্যবহার করে পুলিশের হাত এড়িয়ে চলে। এছাড়া, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, অপ্রাপ্তবয়স্ক যুগল, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে আবদ্ধ ব্যক্তিদের ঘন্টার হিসেবে কিংবা রাতভর রুম ভাড়া দেয়া হয় কোনো ধরনের তথ্য যাচাই ছাড়াই। ফলে সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বনানীর মতো স্পর্শকাতর এলাকায় এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রশাসনিক তদারকির অভাব এবং দুর্নীতির ইঙ্গিত দেয়। হোটেল ইম্পেরিয়ালের মতো বেশ কিছু হোটেল ও গেস্ট হাউজের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে, যেখানে নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই চলছে সমাজবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড।
স্থানীয় সচেতন মহল দাবি করেছে, অবিলম্বে এইসব অবৈধ হোটেল ও গেস্ট হাউজের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে দোষীদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। নতুবা বনানীর আবাসিক পরিবেশ অচিরেই বিপন্ন হয়ে পড়বে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ বি এম মনিরুজ্জামান
নির্বাহী সম্পাদক: রিপন রুদ্র
যুগ্ম-সম্পাদক: জাকিয়া সুলতানা (লাভলী)