অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের অনিয়ম, দুর্নীতি এবং উচ্চাভিলাষী মানসিকতায় পুরো বাহিনীতে তৈরি হয় ইমেজ সংকট। গত প্রায় ১৬ বছরে শাসক দলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠে এসব অসৎ কর্মকর্তা। এ কারণে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ক্ষোভের টার্গেট হয় পুলিশ বাহিনী। উত্তেজিত জনতা হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ চালায় সদর দপ্তরসহ পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনা ও যানবাহনে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানা ও ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আত্মগোপনে চলে যায় পদস্থ কর্মকর্তারা। বিদ্রোহ সৃষ্টি চেষ্টা চালান নিপদস্থ পুলিশ সদস্যরা। ওই সময় নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে পুলিশ বাহিনী। ভেঙে পড়ে চেইন অব কমান্ড। এমন প্রেক্ষাপটে আসে পুলিশের নেতৃত্বের পরিবর্তন। ৮ আগস্টের আগেই নিয়োগ দেওয়া হয় নতুন আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার এবং র্যাব মহাপরিচালক। পরে পর্যায়ক্রমে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে আসে নতুন নেতৃত্ব। যদিও দুই-একটি ইউনিট প্রধানের পদ এখনো ফাঁকা। এরই মধ্যে বিভিন্ন রেঞ্জ ডিআইজি, বিভিন্ন মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, ৬৪ জেলার এসপি, সব থানার ওসি পরিবর্তন করা হয়। এছাড়া পুলিশকে ঢেলে সাজাতে ব্যাপক রদবদল করা হয় অন্যান্য সব পদে। এসবের মাধ্যমে ইমেজ সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। তবে সুযোগ সন্ধানী কতিপয় কর্মকর্তার কারণে এই প্রচেষ্টা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করি।
এদিকে ৫ই আগষ্টের পর বাংলাদেশ পুলিশ যে সংকটে পড়েছে সেখানে ফিরে যেতে পুলিশের আরও সময় লাগবে এবং সহোযোগীতা প্রয়োজন। পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের মনে যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে সেখানে আস্থা আনতে হলে পুলিশ কে হার্ড লাইনে যেতে হবে। সেখানে সেই মনোবল বা যথেষ্ট সহযোগিতা পাচ্ছেনা বাংলাদেশ পুলিশ।
যেখানে নিয়ম ভাঙা হলো নিত্যদিনের স্বাধীনতা সেখানে আইন প্রয়োগ করতে গেলে পুলিশ কে কঠোর ভ‚মিকা পালন করতে হবে কিন্তু এই মুহূর্তে সেই ভ‚মিকা পালন করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে ভেবে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা সম্ভব নয় বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন এবং পুলিশ তাদের দ্বায়িত্ব পালন করতে গেলে দেখা যায় নানা বিছিন্ন ঘটনা। যাহা আমাদের এই স্বাধীন দেশে কাম্য নয়। বরং পুলিশকে আমাদের সহযোগীতা করে তাদের দ্বায়ীত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে। তানাহলে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। তাতে করে পুলিশের নিরাপত্তা ঝুঁকি থেকেই যায়। কারণ এখন যে যার ইচ্ছাধীন চলাফেরা করা কে স্বাধীনতা বা নিজের ব্যক্তিগত অধিকার মনে করছেন কিন্তু তিনি এটা উপলব্ধি করছেন না যে তিনি তার এই স্বাধীনতা প্রকাশ করতে যেয়ে দেশের প্রচলিত আইন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন এবং পুলিশকে অসহায় মনে করেন। রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় দেখা যায় পুলিশের সাথে আইন অমাণ্যকারীরা অসৌজণ্যমূলক আচারন করেন ও তারা অসহায়দের মত পরে থাকে। এভাবে চলতে থাকলে সাধারন মানুষ সেবা পাবেনা বলে মনে হয়না। তাই পুলিশকে দেশ ও জণগনের স্বার্থে এগিয়ে আসতে হবে ও তাদের দ্বায়িত্ব পালনে সহযোগীতা করতে হবে।
সম্প্রতি, কর্মস্পৃহা কমে গেছে পুলিশের। যারা বর্তমানে পুলিশের বিরুদ্ধে অযাচিত অনাকাক্সিক্ষত মন্তব্য করছেন যে ঘুষ দুর্নীতি করতে পারছে না বলে পুলিশের কর্মে কোন মনোযোগ নেই বিষয়টি কতোটা যুক্তির। রাস্তায় ট্রাফিক যখন মামলা দেওয়া শুরু করবে তখন আপনাদের মতো কিছু সুশীল পুলিশ কে গালিগালাজ শুরু করবেন যেহেতু আপনার স্বাধীনতায় পুলিশ হস্তক্ষেপ করেছে ফলে যে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে সেখানে পুলিশ হার্ড লাইনে গেলে আবার পুলিশের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা ঠুকে দিবেন বা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে। কারণ বর্তমানে পুলিশ অপরাধী।
সবার আগে পুলিশ কে অপরাধী না ভেবে সহযোগী মনে করতে হবে এবং পুলিশের আইন প্রয়োগের কাজে সহায়তা করতে হবে। জনগণ এবং পুলিশের ভিতরে আস্থা ফিরিয়ে আনতে না পারলে কাজে গতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আস্থার যায়গা যেমন পুলিশ কে করতে হবে জনগণ কে ঐ সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে পুলিশের থানা বা পুলিশের স্থাপনায় হামলা বা হুমকি দিয়ে কিছুই হবে না বরং তাদের কর্মস্পৃহা কমতে থাকবে শুধু পুলিশ কে ভালো আচরণ করলে হবে না জনগণ কে ও সহনশীলতা দেখাতে ও ধৈর্য্য ধরতে হবে। আইন না মানলে তার ভুক্তভোগী একসময় আমারা সকলেই হয়ে যাবো। আমি আমার পরিবার তথা সমাজকে ঝুঁকিতে পড়তে হবে। ভুক্তভোগী আমরা সকলেই হবো।
তাই সকলের প্রতি অনুরোধ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। গুজব রটানো থেকে বিরত থাকুন পুলিশ কে কাজ করতে দিন। কোন পুলিশ অন্যায় করলে তার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দিন কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে আপনি ও অপরাধীদের দল ভারী করবেন না। কারণ একসময় দেখা যাবে আপনি নিজেও এই ষড়যন্ত্রের শিকার ভুক্তভোগী হয়ে গেছেন কিন্তু কোন আইনি সহযোগিতা পাচ্ছেন না। সময় থাকতে সচেতন না হলে পরে সবাইকে পস্তাতে হবে। তবে পুলিশের মধ্যে যে সংকট রয়েছে সেটি পূরন করতে হলে জণগনের প্রতি আস্থা রাখতে হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ বি এম মনিরুজ্জামান
নির্বাহী সম্পাদক: রিপন রুদ্র
যুগ্ম-সম্পাদক: জাকিয়া সুলতানা (লাভলী)