বাংলাদেশে শিশুশ্রমের প্রধান কারণ হচ্ছে দারিদ্র্য ও অসচেতনতা। দরিদ্র পরিবারের পক্ষে ভরণপোষণ মিটিয়ে সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগান দেওয়া অনেক সময় সম্ভব হয় না। ফলে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে চান না। এ পরিস্থিতিতে বয়সের কথা বিবেচনা না করে উপার্জনের জন্য সন্তানদের যেকোনো পেশায় নিয়োজিত করাকে বাবা-মা লাভজনক বলে মনে করেন।
অন্যদিকে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে শিশুদের পর্যাপ্ত সরকারি সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও অনেক বাবা-মা অসচেতনতার কারণে সন্তানকে স্কুলে না পাঠিয়ে অর্থলাভের আশায় শিশুশ্রমে নিয়োজিত করেন, যা অত্যন্ত অমানবিক, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও শিশুর শিক্ষার পথে সবচেয়ে বড় বাধা। আবার লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ঝরেপড়া শিশুরাও পরে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত হয়ে পড়ে। তার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে বেশি নিয়োজিত হচ্ছে এসব শিশু।
শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করে ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধিত) আইন, ২০১৮’ পাস করা হয়েছে। কেউ যদি শিশুশ্রমিক নিয়োগ করে, তাকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড করা হবে। ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত কিশোর-কিশোরীরা হালকা কাজ করতে পারবে। আগে ১২ বছরের শিশুরা হালকা কাজের এ সুযোগ পেত। ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুশ্রমিককে নিয়োগ দিলে মালিকের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা করা যাবে। এখন প্রস্তাবিত আইনে ৯০ দিনের মধ্যে রায় দিতে হবে বলে উল্লেখ আছে। কোনো কারণে এই ৯০ দিনের মধ্যে রায় দেওয়া না গেলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে অবশ্যই এই রায় দিতে হবে।