রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানের ৪৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়িতে অবস্থিত ‘অল দ্যা বেস্ট’ নামের স্পা সেন্টারটি বর্তমানে একটি অপরাধের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। স্পা সেন্টারের মালিক পায়েলের দাবি অনুযায়ী, তিনি প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন বহু বছর ধরে, যা তাকে বারবার আইনের চোখ ফাঁকি দিতে সাহায্য করেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো—এই অবৈধ ব্যবসার পেছনে পুলিশের ভূমিকা এখন রহস্যে ঘেরা। গুলশান থানায় একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ গুরুতর। তারা জানান, দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বোরকা পরা তরুণীরা ‘অল দ্যা বেস্ট’ স্পা সেন্টারে প্রবেশ ও প্রস্থান করতে দেখা যায়। যদিও বাসিন্দারা এসব অবৈধ কার্যকলাপের বিষয়ে একাধিকবার থানা ও প্রশাসনকে অবহিত করেছেন, তবে কার্যত কোনো পরিবর্তন নেই।
স্থানীয়দের মতে, পুলিশ সাময়িক কিছু অভিযান চালালেও পরে আর তেমন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। উল্টো অভিযোগ রয়েছে, স্পা সেন্টারের মালিক পক্ষ কর্তৃক পুলিশকে অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা হচ্ছে। স্পা সেন্টারটির ভেতরে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় লক সিস্টেম, নজরদারি ক্যামেরা এবং ‘রূপসী তরুণীদের’ দিয়ে যৌন ব্যবসার ফাঁদ। এমনকি এখানে নির্দিষ্ট দামে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীদের ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে।
মালিক পায়েল স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তার প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে এবং অতীতেও তিনি এই সহায়তা পেয়েছেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী, নতুন প্রশাসন আসলেও তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রয়েছে। এই মন্তব্য থেকেই বোঝা যায়, প্রশাসনের নিরবতা আদৌ কি শুধুই দায়িত্বহীনতা, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে রয়েছে কোন প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়া?
এদিকে সাংবাদিকদের ডাকে গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জের (ওসি) কোনো সাড়া না দেওয়া এবং হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো তথ্যেও প্রতিক্রিয়া না পাওয়া এই বিষয়গুলো পুলিশের কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এলাকার সাধারণ মানুষ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, গুলশানের মতো এলাকাগুলোতে এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে প্রশাসন ও পুলিশের সুনির্দিষ্ট ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। শুধু নামমাত্র অভিযান নয়, প্রয়োজন স্থায়ী সমাধান। এছাড়া গণমাধ্যমকর্মীরা সমাজের দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব অপরাধ উন্মোচন করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা পাওয়া যায় না, বরং তালবাহানা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ বি এম মনিরুজ্জামান
নির্বাহী সম্পাদক: রিপন রুদ্র
যুগ্ম-সম্পাদক: জাকিয়া সুলতানা (লাভলী)